এক লাইট এক ফ্যানের বিল ৭২০০ টাকা

কুড়িগ্রামে থাকার ঘরে একটি লাইট ও একটি ছোট ফ্যান চালিয়ে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৭ হাজার ২০০ টাকা। এতে বিপাকে পড়েছেন কাছিরন বেওয়া নামে এক বিধবা নারী।

কাছিরন বেওয়ার বাড়ি জেলার উলিপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রামদাস ধনিরাম সরদার পাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত কাশেম আলীর স্ত্রী। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়ে বাড়িতে একা বসবাস করেন। সরকারের দেয়া বিধবা ভাতা আর অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।

পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দেয়া এমন অস্বাভাবিক বিলে কাছিরনের ঘুম হারাম। বিলের কাগজ নিয়ে এর বাড়ি ওর বাড়ি করে অস্থিরতায় দিন কাটছে তার। দুদিন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উলিপুর অফিসে গেলেও কোনো সমাধান মেলেনি। বিল নিয়ে দিনমজুর কাছিরন দিশেহারা। তিনি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান।

কাছিরনকে দেয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মে মাসের বিলের কাগজে দেখা গেছে, বর্তমান ইউনিট ৬০, পূর্ববর্তী ইউনিট ০ ও ৭১৬। ব্যবহৃত ইউনিট উল্লেখ করা হয়েছে ০। তবে গড় বিল উল্লেখ করা হয়েছে ৬ হাজার ৪৬২ টাকা। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে বিল পরিশোধ করলে কাছিরনকে অন্যান্য চার্জসহ সর্বমোট ৭ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।

কাছিরন বেওয়া জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার পর ঘরে একটি মাত্র লাইট আর একটি মিনি ফ্যান ব্যবহার করে আসছেন তিনি। এর বাইরে তিনি কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করেন না। প্রতিমাসে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসছিল। এ বিলের টাকাও তার কাছে বেশি মনে হওয়ায় মার্চ মাসে তিনি তার মিটারটি পরিবর্তন করে নেন। এরপর দুই মাস কর্তৃপক্ষ তাকে বিদ্যুৎ বিল দেয়নি। মে মাসে তাকে বিদ্যুৎ বিল দেয়া হয়েছে ৭ হাজার ২০০ টাকা। প্রতিবেশীদের কাছে এত টাকার বিদ্যুৎ বিল আসার কথা শুনে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

কাছিরন বলেন, ‘মানুষের বাড়িতে কাজ করা আর সরকারের ভাতার টাকায় কোনো রকমে সংসার চলে। একটা লাইট আর ফ্যান চালাতেই এত টাকা বিল হয় কীভাবে! বিলের কাগজ নিয়ে দুদিন অফিসে গিয়েছিলাম। কোনো কথা শোনে না। ৭ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করতে বলেছে। আমি গরিব মানুষ, এত টাকা কীভাবে পরিশোধ করব!’

কাছিরনের বিদ্যুৎ বিল ৭ হাজার টাকা হওয়া অস্বাভাবিক বলে স্বীকার করেছেন কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উলিপুর অফিসের ডেপুটি জোনাল ম্যানেজার (ডিজিএম) সোহানুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘বিলের কাগজে যে রিডিং উল্লেখ করা হয়েছে সেটি আমার কাছেও অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। আমি বিলিং সহকারীর কাছে জানলাম যে এটা সমস্যা হয়েছে। সংশোধন করা হবে।’

ডিজিএম আরও বলেন, ‘পুরাতন মিটারের একটি ইউনিট ভুলবশত এই বিলে উঠে গেছে। বিলিং সহকারী আগের নষ্ট মিটারের ইউনিট এ বিলে দিয়ে থাকতে পারেন। বিষয়টি দেখে আমরা সংশোধন করে দেব।’

এসএইচ-০২/০৪/২৩ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)