চিলমারী-রৌমারী রুটে শুরু হচ্ছে ফেরি চলাচল

প্রথমবারের মতো ফেরি চলাচল শুরু হচ্ছে কুড়িগ্রামের চিলমারী নৌবন্দরে। ‘কুঞ্জলতা’ নামের ফেরিটি ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী-রৌমারী রুটে চলাচল করবে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বুধবার দুপুরে ফেরি চলাচলের উদ্বোধন করবেন। এ ছাড়া সেখানে উপস্থিত থাকবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার খবরে আনন্দিত স্থানীয়রা।

বিআইডব্লিউটির চিলমারী নৌবন্দর সূত্র জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে চিলমারী-রৌমারী রুটে নৌপথের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। তবে নদের ড্রেজিং করা হলে এ পথের দৈর্ঘ্য কমে হবে ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার। কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে দুটি উপজেলা রৌমারী ও চর রাজীবপুর ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে বিচ্ছিন্ন। এ দুটি উপজেলার মানুষকে নৌকায় করে ঝুঁকি নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা শহরে যেতে হয়। ফেরি চলাচল শুরু হলে তারা নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারবেন।

চিলমারী নৌবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মাহফুজার রহমান বলেন, ‘চিলমারী-রৌমারী রুটে চলাচলকারী ফেরি একসঙ্গে দুই শতাধিক যাত্রী ও বেশ কিছু সংখ্যক যানবাহন পারাপার করতে পারবে। তবে প্রতিদিন কতবার ফেরিটি চলাচল করতে পারবে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফেরি ‘কুঞ্জলতা’ চিলমারী নৌবন্দরে আনা হয়েছ। ইতোমধ্যে ফেরিটির পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। চিলমারী নৌবন্দরে ফেরি সার্ভিস সংযোজন করায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুরের সঙ্গে জামালপুর ও ময়মনসিংহের দূরত্ব কমেছে।

রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবশে উন্নয়ন গণকমিটির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নাহিদ হাসান বলেন, ‘কুড়িগ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি চিলমারী বন্দরে ফেরি সার্ভিস চালু করার। দীর্ঘদিন পর দাবি পূরণ হওয়ায় তারা খুব খুশি।’

হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে নদ-নদী হত্যা করে সেতু নির্মাণের চেয়ে নৌপথগুলো সচল করা আধুনিক পরিবেশসম্মত চিন্তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফেরিটি প্রতিদিন সকাল-দুপুর-বিকেল চলাচল করার দাবি আমাদের।’

রৌমারী উপজেলার কলেজ শিক্ষক নুর ইসলাম (৫৮) বলেন, ‘নৌকায় চড়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিতে আমাদের খুবই ভয় লাগে। নদ উত্তাল থাকলে আরও বেশি ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। এখন ফেরিতে চড়ে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারব। এতে সময় ও টাকা দুটোই বাঁচবে।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিলমারী সফরে এসে চিলমারী নৌবন্দর চালুর ঘোষণা দেন। পরে ওই মাসে সে সময়ের নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান চিলমারীর রমনা ঘাটে চিলমারী নৌবন্দর উদ্বোধন করেন এবং নৌবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময় তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেন। চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি সুবিধা পেয়ে স্থানীয়রা খুশি হয়েছেন। এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি,’ তিনি বলেন।

এসএইচ-০৪/১৯/২৩ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)