পাবনায় অপহরণ মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

পাবনার বেড়া উপজেলা থেকে এক ব্যক্তিকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে অপহরণ ও হত্যার দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে জেলার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আহসান তারেক এ আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার লঘু নন্দনপুর গ্রামের সবুজ দফাদার (৫০), কুষ্টিয়ার খোকশা থানার বনগ্রাম পূর্বপাড়া গ্রামের আবুল কালাম (৪৮), একই গ্রামের আজাদ রহমান (৪৮) ও খলিল উদ্দিন (৫০)। রায় ঘোষণার সময় আজাদ ও আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজন পালাতক আছেন। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম আবদুর রশিদ শিকদার (৫০)। তাঁর বাড়ি জেলার বেড়া উপজেলার রামনারায়ণপুর গ্রামে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত সবুজ দফাদার দিনমজুরের কাজ করতেন। তিনি ঝিনাইদহ থেকে এসে আবদুর রশিদ শিকদারের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ নেন। এই সূত্রে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই সবুজ বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আবদুর রশিদকে ঝিনাইদহে নিয়ে যান। এর এক দিন পর আবদুর রশিদকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় আবদুর রশিদের শ্যালক বাহের মণ্ডল বেড়া থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগের সূত্রে ধরে পুলিশ সবুজকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে হত্যা করে লাশ পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান।

পরবর্তী সময়ে পুলিশ নিহত আবদুর রশিদের লাশ উদ্ধার করতে না পারায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ছয়জনের নামে অপহরণের মামলা করে। মামলাটির দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি ৬ জনের নামেই আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর আদালত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। বাকি দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও জেলা জজ আদালতের বিশেষ কৌঁসুলি আইনজীবী দেওয়ান মজনুল হক বলেন, যেহেতু লাশ উদ্ধার হয়নি, এ জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অপহরণ মামলায় বিচার হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে বাদীপক্ষ মনে করে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দুজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এআর-০৮/০৪/০৪ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)