উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়ার কথা শুনে কলেজছাত্রীকে হত্যা করেন সাইদুল: র‍্যাব

গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় বাসায় ঢুকে কুপিয়ে কলেজছাত্রী রাবেয়া আক্তারকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি সাইদুল ইসলামকে বুধবার গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে করেছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইদুল র‍্যাবকে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে করোনাকালীন ভিকটিমের পরিবারের সবাইকে আরবি পড়ানোর জন্য গৃহশিক্ষক হিসেবে নিহত ছাত্রীর বাবা তাঁকে নিয়োগ দেন। আরবি পড়ানোর সুবাদে তিনি প্রতিনিয়ত ভিকটিমের বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। একপর্যায়ে পরিবারের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক তৈরি হয়। বিভিন্ন সময় সাইদুল ভিকটিমের প্রতি কুনজরসহ একপর্যায়ে ভিকটিমকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।

র‍্যাব জানায়, পাঁচ-ছয় মাস আরবি শেখানোর পর পড়ানো বন্ধ করে দেন। পরে সাইদুল প্রতারণামূলকভাবে ২০২০ সালের ডিসেম্বর ভিকটিমকে মৌখিকভাবে বিবাহ করে। পরবর্তীকালে সাইদুল বিবাহের বিষয়টিকে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ভিকটিম ও তাঁর পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। ভিকটিমের পরিবার অসৎ উদ্দেশ্যের বিষয়টি জানতে পেরে সাইদুলের সঙ্গে ভিকটিমের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ভিকটিম গাজীপুর সদর থানায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে উত্ত্যক্ত করার বিষয়ে একটি অভিযোগ করেন। যার কারণে সাইদুল কিছুদিন ভিকটিমকে উত্ত্যক্ত করা থেকে বিরত থাকেন।

র‍্যাব আরও জানায়, কিন্তু দুই মাস ধরে ভিকটিমের কলেজে ও বাসার বাইরে যাওয়া-আসার পথে পুনরায় তাঁকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন এবং প্রস্তাবে রাজি না হলে ভিকটিমকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। একপর্যায়ে সাইদুল জানতে পারে যে ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমকে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাহরে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিষয়টি সাইদুল কোনোভাবেই মেনে নিতে না পেরে ভিকটিম ও তাঁর পরিবারের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ভিকটিমকে হত্যার পূর্বপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৭ মে বিকেলে স্থানীয় বাজারে কামারের দোকানে ৬৫০ টাকা দিয়ে গরু জবাই করার একটি ছুরি তৈরি করতে দেন। পরদিন ৮ মে সন্ধ্যায় ছুরি সংগ্রহ করে ভিকটিমের বাসায় গিয়ে তাঁর রুমে ঢুকে ছুরি দিয়ে মাথায়, গলায়, হাতে ও পায়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় ভিকটিমের চিৎকারে তাঁর মা ও দুই বোন তাঁর ঘরে গিয়ে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে সাইদুল ছুরি দিয়ে তাঁদেরও এলোপাতাড়ি কুপিয় জখম করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

এআর-০৫/১১/০৫ (ন্যাশনাল ডেস্ক)