সংসদে ‘আয়কর বিল, ২০২৩’ পাস

আয়কর ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে রোববার ‘আয়কর বিল-২০২৩’ পাস হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিলের বিরোধিতা করে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সদস্য মো. ফখরুল ইমাম, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রওশন আরা মান্নান, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ও কাজী ফিরোজ রশীদ ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। এ সময় সরকারি দল ও বিরোধী দলের কয়েকজন সংসদ সদস্যের কয়েকটি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়।

বিলের উপর আনীত বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আয়কর ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে এ বিলটি আনা হয়েছে। বিলটি নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। সংসদীয় কমিটিতেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। এ বিল পাস হলে সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবে। রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়বে। তাই বিলটি পাস হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, বাংলায় সহজবোধ্য করে আইনটি করা হচ্ছে। রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। কিন্তু কারও ওপর জোর করে চাপিয়ে দিয়ে সেটা করা যাবে না। ২০০৯ সালে রাজস্ব আদায় ছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এখন সেটা ৬ গুণ বেড়েছে। এখানে সরকার খুব খারাপ করেছে তা নয়। আবার খুব ভালো করেছে সেটাও না।

সংসদে পাস হওয়া বিলে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন সুপারিশ আমলে নেওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটি তাদের প্রতিবেদনে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত বাধ্যতামূলক ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করে। এর পরিবর্তে কমিটি উল্লিখিত পরিমাণের ব্যাংকে মেয়াদী বা স্থায়ী আমানত থাকা ব্যাংক আমানতকারীদের জন্য রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আয়কর বিলে মোট আয়ের দুই-তৃতীয়াংশ বা চার লাখ ৫০ হাজার টাকা বেতনভোগী ব্যক্তিদের করযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। আর সংসদীয় কমিটি বেতনভোগী ব্যক্তির আয়ের এক-তৃতীয়াংশ বা চার লাখ ৫০ হাজার টাকা করযোগ্য আয় হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব করেছে। সংসদ এসব প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।

সংসদে পাস হওয়া বিলে কোম্পানি, ফার্ম, ব্যক্তি সমিতি এবং ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের তহবিলগুলোকে নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী জমা দিতে হবে, যা প্রস্তাবিত বিলে দুই কোটি টাকা ছিল। সেভিংস সার্টিফিকেট এবং ডিবেঞ্চারের জন্য ট্যাক্স রেয়াত বিষয়ে পাস হওয়া আইনে তথ্য স্পষ্ট করা হয়েছে।

পাস হওয়া বিলে বিদেশ ভ্রমণের সময় সম্পদ বিবরণী বাধ্যতামূলক জমা দেয়ার বিষয়ে প্রস্তাবিত ধারা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া পাস হওয়া আইনে গুলশান বনানী, বারিধারা, মতিঝিল ও দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকার সঙ্গে আরও নতুন এলাকার নাম যোগ করা হয়েছে। এসব এলাকায় ফ্ল্যাট বা ভবনে বিনিয়োগের ওপর বিশেষ করের হার কিছু ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে।

এআর-০৭/১৮/০৬ (ন্যাশনাল ডেস্ক)