জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেলো নাটোরের কাঁচাগোল্লা

ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে নাটোরের জনপ্রিয় মিষ্টি কাঁচাগোল্লা । শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) গত ৮ আগস্ট এই স্বীকৃতি প্রদান করে। এ নিয়ে দেশে মোট ১৭টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেলো।

পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মির্জা গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘কাঁচাগোল্লাকে আমরা জিআই স্বীকৃতি দিয়েছি কারণ এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। এর মাধ্যমে কাঁচাগোল্লার উৎপাদকরা দেশে-বিদেশে এর বিপণন বাড়াতে সক্ষম হবেন।’

চলতি বছরের ৩০ মার্চ নাটোর জেলা প্রশাসক কাঁচাগোল্লাকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি প্রদানে আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে ঐতিহ্যবাহী এই মিষ্টান্নকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

মির্জা গোলাম সারোয়ার বলেন, কোনো পণ্যের জিআই স্বীকৃতির আবেদন এলে তা যাচাই-বাছাই করে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এরপর দুই মাস সময় দেওয়া হয়, এ নিয়ে কারও কোনো আপত্তি আছে কি না। আপত্তি না থাকলে ওই পণ্যের স্বীকৃতি দিয়ে দেওয়া হয়। নাটোরের কাঁচাগোল্লার ক্ষেত্রে কেউ কোন আপত্তি তোলেনি। তাই এর স্বীকৃতি মিলেছে।

কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখন্ডে মাটি, পানি, আবহাওয়ার প্রেক্ষাপটে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দেশের প্রথম ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পায় জামদানি।

আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্রপার্টি রাইটস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউআইপিও) নিয়ম মেনে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিপিডিটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি ও সনদ দিয়ে থাকে। ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন হয়। ২০১৫ সালে আইনের বিধিমালা তৈরির পর জিআই পণ্যের নিবন্ধন নিতে আহ্বান জানায় ডিপিডিটি।

উল্লেখ্য, দুধের ছানার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে বানানো হয় কাঁচাগোল্লা। ১৭৬০ সালে মহারাণী ভবানীর রাজত্বকালে এই কাঁচাগোল্লার সুখ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়াতে থাকে। সে সময় জমিদারদের মিষ্টিমুখ করতে ব্যবহৃত হতো এই বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা। শোনা যায় বিলেতের রাজ পরিবারে পর্যন্ত এই কাঁচাগোল্লা যায়।

এআর-০৪/১০/০৮ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)