ভারত-কানাডার সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

কানাডার শিখ সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা এবং কথিত খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যা ইস্যুতে নিজের দুই গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র কানাডা ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সঙ্গে হরদীপ হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছে দেশটি।

মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর উদ্দেশে পাঠানো এক ইমেইলবার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েনে ওয়াটসন বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যে অভিযোগ এনেছেন, তাতে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

‘যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, অবিলম্বে হত্যাকারী এবং এই হত্যার পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। (যদি তা ঘটে) সেক্ষেত্রে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’

কানাডার বসবাসকারী শিখ ধর্মাবলম্বীদের একজন নেতা ছিলেন হরদীপ সিং নিজ্জর। ১৯৭৭ সালে তিনি ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধর জেলা থেকে কানাডা গিয়েছিলেন, পরে সেখানাকার নাগরিকত্বও অর্জন করেন।

এদিকে হরদীপ ভারতের একজন তালিকাভুক্ত ‘ফেরার’ সন্ত্রাসী ছিলেন। ভারতের অন্যতম বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন খালিস্তানি টাইগার ফোর্স এবং ‘শিখস ফর জাস্টিস’ কানাডা শাখার নেতা ছিলেন তিনি। দু’টি সংগঠনই ভারতে নিষিদ্ধ। হরদীপকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করাতে আগ্রহী ছিল ভারত।

গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের ভ্যানকুভার শহরের একটি গুরুদুয়ারার (শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) কাছে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন হরদীপ।

এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সম্প্রতি ভারতকে সরাসরি দায়ী করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সোমবার কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ট্রুডো বলেন, তার দেশের গোয়েন্দারা হরদীপ হত্যায় ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছেন।

কানাডার জন্য এই ঘটনাটি যে তীব্র অবমাননাকর, তা বোঝাতে গিয়ে পার্লামেন্ট ভাষণে ট্রুডো বলেন, ‘কানাডার মাটিতে একজন কানাডীয় নাগরিককে হত্যার সঙ্গে বিদেশি সরকারের জড়িত থাকার বিষয়টি আমাদের সার্বভৌমত্বের অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘন।’

ট্রুডো পার্লামেন্টে এই অভিযোগ তোলার পরদিনই কানাডায় নিযুক্ত ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিসি উইং (র) কানাডা শাখার প্রধানকে বহিষ্কারাদেশ দেয় কানাডীয় সরকার।

এদিকে, ট্রুডোর এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে ভারত। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ‘কানডা সরকারের এই অভিযোগ অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভারত বরারবরই আইনের শাসনে প্রতি দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।’

এআর-০৫/১৯/০৯ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)