আমরা চাই না রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পালটাপালটি বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘আমরা চাই না রাশিয়া, আমেরিকা কেউ আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাক, এটা তাদের বিষয় নয়।’

বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের জন্য নিয়ম আছে এবং সে অনুযায়ী তারা কথা বলবে। আমরা আমেরিকা, পশ্চিমা দেশ সম্পর্কে বলেছি, অন্য দেশ সম্পর্কেও আমাদের একই বক্তব্য।’

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার শাহীনবাগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে সংঘটিত একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে পালটাপালটি বক্তব্য দেওয়া শুরু।

ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মায়ের ডাকের সঙ্গে তার পূর্বনির্ধারিত বৈঠক শেষ করেন। রাষ্ট্রদূত যেখানে ছিলেন, প্রতিবাদকারীরা ওই ভবনটিতে প্রবেশের চেষ্টা করায় বৈঠকটি বিঘ্নিত হয়। পরে আরও কয়েকজন প্রতিবাদকারী রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ঘিরে রাখে। এরপর নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় সেখান থেকে দ্রুত বেরিয়ে যান পিটার। এ ঘটনায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ ঘটনায় ২০ ডিসেম্বর ঢাকায় রুশ দূতাবাস একটি বিবৃতি দেয়। এতে বলা হয়, গণতন্ত্র সুরক্ষা বা অন্য কোনো অজুহাতে বাংলাদেশসহ তৃতীয় কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে রাশিয়া বদ্ধপরিকর। এর পালটা জবাবে মার্কিন দূতাবাসের এক টুইটে প্রশ্ন করা হয়, ইউক্রেনের ক্ষেত্রে রাশিয়া এ নীতি অনুসরণ করেছে কিনা।

সবশেষ গতকাল (রোববার) মস্কোয় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা শাহীনবাগের ঘটনাকে মার্কিন কূটনীতিকের তৎপরতার প্রত্যাশিত ফল বলে মন্তব্য করেন। আরও বলেন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করে, এমন পদক্ষেপ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

রাশিয়ার এমন প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, রাশিয়া কেন এ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, সে বিষয়ে তাদের প্রশ্ন করুন।

মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই- প্রত্যেক দেশ যে নিয়ম আছে, জেনেভা কনভেনশন আছে, সে অনুযায়ী কাজ করবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে না। আমরা পরিপক্ব, স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ- এটা সবার মনে রাখা উচিত। আমার এ বক্তব্য রাশিয়া, আমেরিকার সবার জন্য প্রযোজ্য।

এ সময় আওয়ামী লীগ নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনোভাবে ক্ষমতায় আসেনি উল্লেখ করে মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদাবোধ সমুন্নত রেখেছে। এসব নিয়ে আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। আমি নিশ্চিত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক।

এআর-১০/২৬/১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)