রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপ্পু। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আজ রোববার তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আজ সকালে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নাম দাখিল করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী আজ মনোনয়ন দাখিল, আগামীকাল যাচাই-বাছাই এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন নির্ধারিত রয়েছে। আর অন্য কোনো প্রার্থী না থাকলে ওইদিনই রাষ্ট্রপতির বিষয়টি চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হতে পারে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে বের হওয়ার সময় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, ‘সব কিছু আল্লাহর ইচ্ছা। এখন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। সব সর্বশক্তিমান আল্লাহর ইচ্ছা।’

মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী তিনি দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপপুর নাম চূড়ান্ত করেছেন। আর দলের পক্ষে আমরা সেই মনোনয়ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছি। এ সময় তিনি সাহাবুদ্দিন চুপপুর বিস্তারিত পরিচয় তুলে ধরেন।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপপু পেশায় একজন আইনজীবী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। তিনি ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এর আগে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদকের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন আহমেদ চুপপু।

সাহাবুদ্দিন চুপপু ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের অভিযোগ এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সাহাবুদ্দিন চুপপু ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কারাবরণ করেন তিনি। এ ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক ছেলেসন্তানের বাবা। তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন।

এআর-০১/১২/০২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)