শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। শনিবার বিকেল ৪টার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এবার মেলার প্রতিপাদ্য ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’।
এর আগে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। এছাড়াও বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী।
অনুষ্ঠানে সাত লেখক–কবিকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এবারের একুশের প্রেক্ষিত আমাদের নতুন দিগন্তে প্রতিস্থাপন করেছে। অর্ধ শতাব্দী পর এই মহাবিস্ফোরণ গণঅভ্যুত্থান হয়ে দেশ পাল্টে দিল। এই বিষ্ফোরণ আমাদের মধ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়বার প্রত্যয় গ্রথিত করে দিয়ে গেল।’
এবার বইমেলায় অংশ নেওয়া ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৯টি থাকবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, ৬০৯টি থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। গত বছর বইমেলায় ৬৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯৩৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
মেলায় ৩৭টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। এরমধ্যে একটি বাংলা একাডেমিতে ও ৩৬টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। লিটল ম্যাগাজিন কর্নারটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছে গাছের নিচে থাকবে, তাতে প্রায় ১৩০টি লিটল ম্যাগাজিন স্টল থাকবে।
বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, বইমেলার বিন্যাস গত বছরের মতোই থাকবে। মেট্রোরেল স্টেশনের কাছাকাছি হওয়ায় মেলা থেকে বের হয়ে যাওয়ার গেটটি রমনা মন্দিরের দিকে সরানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যান্ট ও ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের কাছে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য চারটি পয়েন্ট থাকবে। মেলার রাখা হয়েছে খাবারের স্টল। মেলা প্রাঙ্গণে ৩০টি শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে, যা মেলার ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
শনিবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত
বিগত বছরগুলোর মতো এবারও মেলার মূল মঞ্চ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, বই খোলা এবং ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে। মূল মঞ্চে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় সেমিনার ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি বাদে শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে বিশেষ ‘শিশু প্রহর’। প্রতিবছরের মতো এবারও মেলার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শিশু-কিশোরদের জন্য শিল্পাচার্য, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা হবে।
বইমেলা প্রতি কর্মদিবসে সকলের জন্য বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং সরকারি ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। দুপুরের খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি থাকবে। একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে মেলা সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।
এআর-০১/০১/০২ (জাতীয় ডেস্ক)