বজ্রপাত থেকে বাঁচার ১০টি সহজ উপায়

বজ্রপাত থেকে বাঁচার

চলছে চৈত্র মাস। চৈত্রের তাপদাহে প্রকৃতি যেন রুক্ষ হয়ে উঠেছে। এ সময় ঈশান কোণ বা উত্তর পূর্ব কোণ থেকে ধেয়ে আসে শক্তিশালী ঝড়। যাকে আমরা চিনি কালবৈশাখী ঝড় বলে। এই ঝড় যতটা না সুন্দর ততটাই ভয়ংকর। এ সময়টা ঝড়ের পাশাপাশি আমাদের দেশে বজ্রপাত হয়। প্রতিবছর অনেক মানুষ বজ্রপাতে অকালে জীবন দেয়। মানুষের পক্ষে প্রকৃতির সাথে লড়ে জেতাটা অনেক দুঃসাহসীক বিষয়। বজ্রপাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে রয়েছে কিছু টিপস। যা অনুসরণ করলে রোধ হতে পাতে এই বজ্রপাতে অকালে জীবন যাওয়াটা। আসুন জেনে নেয়া যাক বজ্রপাত থেকে নিজেকে বাঁচাবেন যেভাবে।

সাধারণত মার্চ থেকে জুন এবং অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বজ্রঝড় হয়ে থাকে। বজ্রপাতের সময় পাকা বাড়ির নিচে আশ্রয় নিতে এবং উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন আবহাওয়াবিদরা।

আসুন জেনে নেই বজ্রপাতের সময় আমাদের বাঁচার উপায়গুলো:

১. বজ্রপাতের সময় উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বিদ্যুৎস্পর্শের আশঙ্কা বেশি থাকে। এসময় গাছ বা খুঁটির কাছাকাছি থাকা নিরাপদ নয়। ফাঁকা জায়গায় যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছে বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে। তাই এসব স্থান এড়িয়ে চলুন।

২. ঘন ঘন বজ্রপাতের সময় খোলা বা উঁচু জায়গায় না থেকে দালানের নিচে আশ্রয় নিন। বজ্রপাতের সময় ঘরের জানালার কাছে উঁকিঝুঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন।

৩. বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ, জানালার গ্রিলসহ যেকোন ধাতব পদার্থ সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন। এ সময় মোবাইল ও ল্যান্ডফোন ব্যবহার থেকেও বিরত থাকুন।

৪. বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব ধরনের যন্ত্রপাতি এড়িয়ে চলুন। বজ্রপাতের আভাস পেলে যন্ত্রপাতির প্লাগ খুলে রাখুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও স্পর্শ করা ঠিক হবে না।

৫. বজ্রপাতের সময় গাড়িতে থাকলে দ্রুত বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টি হয়, তাহলে গাড়ি কোনও গাড়িবারান্দা বা পাকা ছাউনির নিচে রেখে অপেক্ষা করুন।

৬. প্রতিটি বাড়ি বা বিল্ডিং এ বজ্র নিরোধক দন্ড স্থাপন নিশ্চিত করুন। খোলা স্থানে অনেকে একত্রে থাকাকালীন বজ্রপাত শুরু হলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে দূরে সরে যান।

৭. কোন বাড়ীতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে সাবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যান। ঘন কালো মেঘ দেখা দিলে অতি জরুরী প্রয়োজনে রাবারের জুতা পরে বাইরে বের হতে পারেন এবং প্লাষ্টিক বা কাঠের হাতলযক্ত ছাড়া ব্যবহার করুন।

৮. বজ্রপাতের সময় খোলা মাঠে থাকলে পায়ের আঙ্গুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙ্গুল দিয়ে মাথা নিচু করে বসে পড়ুন। বজ্রপাতে আহতদের বৈদ্যুতিক শকের মত করেই চিকিৎসা করতে হবে।

৯. কালো মেঘ দেখা দিলে নদী, পুকুর, ডোবা বা জলাশয় থেকে দূরে থাকুন। নৌকা নিয়ে মাছ ধরার ক্ষেত্রে বজ্রপাতের সময় মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকায় ছাউনির নিচে অবস্থান করুন।

১০. বজ্রপাতের সময় গাড়ীর ভেতর অবস্থান করলে গাড়ীর ধাতব অংশের সাথে শরীরের সংযোগ ঘটাবেন না। সম্ভব হলে গাড়ীটিকে নিয়ে কোন কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিন অথবা গাড়ীতে থেকে নেমে নিরাপদ আশ্রয়ে যান।

এছাড়া বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমতে পারে। অনেক সময় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে সেই পানিতে পড়ে হতে পারে দুর্ঘটনা। বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলেও খেয়াল রাখতে হবে। কেউ আহত হয়ে থাকলে দেরি না করে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করতে হবে। তবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট কাউকে ঘটনার সময় খালি হাতে স্পর্শ করলে নিজেও ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি একান্ত বের হতেই হয়, রাবারের গামবুট এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে।

আরএম-১৭/০৩/০৪ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)