সকাল সকাল ভালো লাগে না কিছুই?

সকাল সকাল ভালো

শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এই সমস্যাটি অনেকের জীবনেই বাস্তবতা। এমন অনেকেই আছেন, যাদের সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে হলে ভালো লাগে না কিছুই। মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে যায়, কোনো কাজ করতে ইচ্ছে করে না, ক্লান্ত ও বিষণ্ণ লাগে।

এই সমস্যা থেকে বাঁচতে তারা বেলা করে ঘুম থেকে ওঠেন, সকাল সকাল কোনো কাজই করতে পারেন না। ফলে শিক্ষা বা কর্মজীবন ব্যাহত হয়, পারিবারিক জীবনেও এর প্রভাব পড়ে।

সকালবেলায় খারাপলাগা বা শারীরিক-মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করা সত্যিকারের একটি সমস্যা আর এটি হয়ে থাকে আমাদের ভুলের কারণেই। চলুন, জেনে নিই সকাল সকাল এমন বোধ হবার কারণ ও প্রতিকারের উপায়।

প্রথম কারণ ঘুম

সকালবেলায় শরীর ও মন খারাপ লাগার সবচেয়ে প্রধান কারণ হচ্ছে ঘুম কম হওয়া। আপনি যদি রাত বেশি জাগেন, অনেক রাত জেগে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় পার করেন, তাহলে এটা খুবই স্বাভাবিক যে সকালবেলায় আপনি অসুস্থ বোধ করবেন। আর শরীর অসুস্থ বোধ করলে মনটাও ভালো লাগে না। নিজেকে সকালবেলার পাখি করতে চাইলে অবশ্যই রাতজাগা পরিত্যাগ করতে হবে।

একটি রুটিন থাকা জরুরি

সকালবেলায় খারাপ লাগার সমস্যাটি প্রতিহত করতে নিজের জন্য একটি রুটিন তৈরি করুন এবং তা অনুসরণ করুন কঠোরভাবে। কিছুদিন অনুরসণ করলেই তা অভ্যাস হয়ে যাবে। প্রতিদিন একই সময়ে জেগে উঠুন, ফ্রেশ হোন, ব্যায়াম করুন, নাস্তা করুন, দিন শুরু করুন। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং প্রতিদিন সকাল শুরু করুন নিজের প্রিয় কোনো কাজ দিয়ে।

ভালো না লাগলেও করতে হবে যা

এটা জরুরি নয় যে স্বাস্থ্যের প্রয়োজনে যা করতে হয় তার সবকিছুই আপনার ভালো লাগবে। কিন্তু ভালো না লাগলেও কাজগুলো করতে হয়, কারণ সেটাই সঠিক। যেমন—সকাল সকাল ঘুম থেকে জেগে ওঠা, ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যকর নাস্তা করা, শান্ত মনে শিক্ষা বা কর্মজীবনের শুরু করা ইত্যাদি। কিছুদিন করলেই আপনার অভ্যাস হয়ে যাবে এবং ভালো লাগতে শুরু করবে।

পেট ভরানো খাবার

সকাল সকাল একটি চমৎকার নাস্তা শরীর ও মন দুটোকেই ভালো করে তোলে। তবে হ্যাঁ, ভাজা-পোড়া বা অস্বাস্থ্যকর নাস্তা খেলে অবশ্যই উপকার পাবেন না। খেতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত কিছু। দিনের প্রধান খাবারটি সকালেই সেরে নেওয়ার অভ্যাস করুন। এতে সারাদিন যেমন এনার্জি পাবেন, অন্যদিকে সকাল সকাল জেগে ওঠার জন্যে একটি অন্য রকম আগ্রহ কাজ করবে।

মন ভরানো টুকিটাকি

শরীরকে তো খাবার দেওয়া হলো, এবার খোরাক দেওয়া চাই মনকেও। সকাল সকাল শারীরিক ব্যায়াম মনের ওপরেও একটি চমৎকার প্রভাব ফেলে। এ ছাড়াও সকাল সকাল মেডিটেশন বা ধ্যান করার খুবই উপকারী প্রমাণিত হবে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে। শুনতে পারেন নরম সংগীত, কর্মক্ষেত্রে যেতে যেতে পড়তে পারেন চমৎকার কোনো বই। দেখবেন নিজের অজান্তেই ভালো লাগতে শুরু করেছে। বিষণ্ণতা ও অনীহা দূর হয়ে গেছে।

রাতের বেলার নেগেটিভিটি

সকালবেলায় সতেজ মন চাইলে ঘুমের আগে নেগটিভ সবকিছু থেকেই দূরে থাকতে হবে। বিছানায় শুয়ে মোবাইলে ব্রাউজ করা, ঝগড়া করা, রাত জেগে পর্নোগ্রাফি দেখা, সারারাত ফোনে কথা বলা ইত্যাদি সব অভ্যাসই ত্যাগ করতে হবে।

আবহাওয়া

অনেক সময়ে খারাপ আবহাওয়ার কারণেও সকাল সকাল খারাপ লাগতে পারে। বেশি গরমের কারণে ক্লান্তি ও বিষণ্ণতা চেপে ধরে। এ ক্ষেত্রে প্রচুর পানি পান করতে হবে ও চমৎকার একটি গোসল সেরে নিতে হবে। এতে ভালো বোধ হবে। অন্যদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টির দিনে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশেও শরীর-মন খারাপ লাগতে পারে। সে ক্ষেত্রে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা বা কফি আপনাকে অনেকটাই চাঙ্গা করে তুলবে।

দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টি হচ্ছে সকাল। তাই সকালগুলোতে চাঙ্গা হয়ে উঠুন, অনেক কাজই সহজ হয়ে উঠবে।

আরএম-১৫/১৩/০৪ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)