দুনিয়ার সবচেয়ে দামী কফি ঠিক কেমন খেতে?

দুনিয়ার সবচেয়ে দামী

আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোতে একটি ক্যাফে এই মৌশুমে এমন এক বিশেষ ধরনের কফি বিক্রি করছে, যার দাম ধরা হয়েছে প্রতি কাপ ৭৫ ডলার।

‘ক্লাচ কফি’ নামে ওই কোম্পানির বক্তব্য, পানামাতে তৈরি এক বিশেষ ধরনের ও অত্যন্ত উঁচু জাতের বিন থেকে তৈরি বলেই ওই কফির এত দাম।

‘এলিডা গেইশা ন্যাচারাল’ নামে ওই কফি বিন সম্প্রতি প্রতি পাউন্ড ৮০৩ ডলারে বিক্রি হয়েছে।

এটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়া কফি হিসেবে রেকর্ডও গড়েছে।

কী এই মহার্ঘ কফির বিশেষত্ব, আর এর স্বাদটাই বা ঠিক কেমন – তা পরখ করে দেখতে গিয়েছিলেন বিবিসির কোডি মেলিসা গডইউন।

ক্লাচ কফি পাশাপাশি দুটো একই রকম কাপে ঢেলে দিচ্ছিল দুরকমের কফি – যার একটার দাম ৭৫ ডলার, আর অন্যটা মাত্র ৪ ডলার।

খালি চোখে দেখে দুটো আলাদা করাই মুশকিল, আর তাই গ্রাহকদের দুটোতেই চুমুক দিয়ে বলতে বলা হচ্ছে – তারা কি ধরতে পারছেন কোন কফিটা বেশি দামী?

মেডলিন লওফ আর বেন জারসোর কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল তা এরকম।

বেন কিন্তু প্রথম চুমুকেই কোনটা বেশি দামি, সেটা সঠিক বেছে নিয়ে জানালেন ওটার স্বাদ অনেক বেশি ‘কমপ্লেক্স’ এবং খেতেও ওটা জলের মতো একেবারেই পানসে নয়।

তার কথায়, “ওপরের তৈলাক্ত স্তরটাও খুব পরিষ্কার, আপনি দেখেই বুঝবেন ওটা খুব ভাল বিন থেকে তৈরি।”

মেডলিন পাশ থেকে যোগ করেন, “স্বাদটা কিছুটা যেন তেতো – কিন্তু সেটা ভালোর দিকে।”

আর বেনের মত, সার্বিকভাবে ফ্লেভারটা যেন ‘ফ্রুটি’, মানে কষকষে ফলের রসের মতো।

বিবিসির প্রতিবেদকও মানছেন, সাধারণ কফির চেয়ে এর স্বাদের ফারাক অবশ্যই আছে।

কিন্তু সেটা কি এতটাই আলাদা যে মানুষ এক কাপের জন্য ৭৫ ডলার খারচ করতেও রাজি হবে?

ক্লাচ কফির মালিক ও কর্ণধার বো থিয়ারা জবাবে বলছেন, “এই কফি বিনটা ‘বেস্ট অব প্যানামা’ প্রতিযোগিতায় সেরার খেতাব পেয়েছে।”

“এই প্রতিযোগিতাটা কফির দুনিয়ায় গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের সঙ্গে তুলনীয়, কাজেই বুঝতেই পারছেন কোথায় এটা আলাদা।”

বো থিয়ারা আরও বলছিলেন, সারা দুনিয়ায় এই কফিটা তৈরিই হয়েছেই মাত্র একশো পাউন্ড।

যার মধ্যে তার কোম্পানি কিনেছে দশ পাউন্ড, আর তা থেকে মাত্র আশি কাপ কফি তৈরি করা যাবে।

কিন্তু প্রশ্ন হল, এখনও পর্যন্ত তা থেকে বিক্রি হয়েছে কটা?

বো থিয়ারা বলছিলেন, “আমার কোম্পানি ৭৫ ডলারের ওই দামী কফি এ পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছে কুড়ি কাপ।”

“আর গ্রাহক ও সমঝদারদের টেস্ট করাতে খরচ হয়েছে আরও গোটা বিশেক কাপ।”

এই কফিগুলো আলাদা আলাদা প্যাকেটে মুড়ে অত্যন্ত যত্নে রাখাও হচ্ছে তালাবন্ধ সেফের ভেতর।

টেস্টার বেন ও মেডলিন জানাচ্ছিলেন, এখন একটু পয়সার টানাটানি চলছে বলে হয়তো নিজের পয়সা খরচ করে দুনিয়ার সবচেয়ে দামী এই কফি এখনই খেতে পারবেন না।

তবে তারা দুজনেই একমত, পকেটে টাকাকড়ি এলে পরে কখনও ভেবে দেখা যেতেই পারে!

আরএম-০১/৩১/০৫ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)