করোনা সংকটে দাম্পত্য জীবন থাকুক সংকট মুক্ত

করোনাভাইরাস সংকটের প্রভাব পড়েছে ও পড়বে সব ক্ষেত্রেই। যার মাঝে দাম্পত্য জীবন রয়েছে বেশ বড় একটি অংশ নিয়ে। স্বামী-স্ত্রীকে একই বাসায় দিনের পর দিন একসাথে চব্বিশ ঘণ্টা থাকতে হচ্ছে। এই বিষয় অনেক দম্পতির জন্য আনন্দদায়ক বিষয় হলেও, সব দম্পতিদের জন্য নয়। বরং একই ছাদের নিচে একসাথে লম্বা সময় পার করার বিষয়টি কিছু ক্ষেত্রে উভয়ের জন্যেই বেশ চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয় হিসেবে ধরা দেয়।

এছাড়াও একসাথে থাকার বিষয়টিকে যতটা রোম্যান্টিক কিংবা উপভোগ্য মনে করা হয়, বাস্তবে ঠিক তেমনটা নয়। একটা সময় পর মনোমালিন্য, কথা কাটাকাটি, মতের অমিল, নিয়মের গড়মিলে সূত্রপাত ঘটে নানান সমস্যার।

এই বিষয়টিকে সামনে রেখে সিএনএন হেলথ কথা বলেছে লাইসেন্সধারী ম্যারেজ অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপিস্ট, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং বিবাহিত দম্পতিদের সাথে। সবার সাথে আলোচনা করে তারা বের করার চেষ্টা করেছেন, এই সংকটময় মুহূর্তে কীভাবে দাম্পত্য জীবনকে সংকট মুক্ত রাখা সম্ভব।

যোগাযোগ করা, বারবার

যেকোন মুহূর্তে, অবস্থা যেকোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে যোগাযোগ করা হল সুন্দর সম্পর্কের প্রধান চাবিকাঠি। পরস্পরের সাথে যোগাযোগ যত বেশি বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে, সম্পর্কের ভিত ততই মজবুত হবে। এর জন্য একদম ছোটখাটো ব্যাপার থেকে বড় ও সিরিয়াস বিষয় নিয়েও উভয়ের মাঝে যোগাযোগ রাখতে হবে। দুইজন মানুষ যতই একসাথে ও পাশাপাশি থাকুক না কেন, পরস্পরের মাঝে যদি কথা চালাচালি না হয়, তথ্যের আদান-প্রদান না ঘটে তবে মানসিক দূরত্ব হয়ে যায় যোজন যোজনের।

পারসোনাল স্পেসকে গুরুত্ব দেওয়া

উভয়ের সাথে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা এবং একে-অন্যকে পারসোনাল স্পেস না দেওয়া কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি বিষয়। পারসোনাল স্পেস বজায় রেখেও যোগাযোগ বজায় রাখা সম্ভব এবং যে কোন সম্পর্কে, বিশেষভাবে দাম্পত্য জীবনে পারসোনাল স্পেস খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রত্যেককের স্বকীয়তা ও নিজস্বতার উপর ফোকাস রেখে যে যার মত করে থাকতে পারলে দাম্পত্যে সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে আসে বলা জানাচ্ছেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা।

দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া

বহু দম্পতিকেই এই লকডাউনে বাসায় বসে অফিস করতে হচ্ছে একসাথে। বাসায় থেকে অফিস করা অনেকের জন্য নতুন না হলেও, স্বামী-স্ত্রীর একসাথে কাজ করার বিষয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নতুন। তাদের জন্য পাবলিক রিলেশনশিপ প্রফেশনাল অ্যালেক্সানড্রা ফন্ড্রেন পরামর্শ দিচ্ছেন, দুজন দুজনকে সহকর্মীর হিসেবে ধরে নিলে সংসারে ও অফিসের কাজ সহজ হয়ে যাবে। যেহেতু দুজনকেই যার যার অফিসের কাজ করতে হচ্ছে এবং সাথে সংসার সামলাতে হচ্ছে, তাই দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়াই সবচেয়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত।

ছোট বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া

ছোট বিষয়গুলো আসলে যতই তুচ্ছ মনে হোক না কেন, ছোটখাটো বিষয়গুলো থেকেই বড় ধরনের ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়। তাই অ্যালেক্সানড্রা বলছেন, সম্পর্কে কোন ছোট বিষয়কেই পাশ কাটিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। ছোট খারাপ লাগা যতটা বড় প্রভাব তৈরি করবে, ছোট ভালো লাগাও অনুরূপভাবে বড় প্রভাবে অবদান রাখবে। দাম্পত্যে এই বিষয়টি আরও বেশি ভূমিকা রাখে।