তারুণ্য ধরে রাখার দারুণ কৌশল

আজীবন তারুণ্য ধরে রাখতে চায় সবাই। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে থাকে। তবু সবাই চায় তাকে দেখতে তরুণ লাগুক। বয়সের ছাপ লুকানোর জন্য নামী দামী ক্রিম, কসমেটিক্সও ব্যবহার করেন।

এসব প্রসাধনী সাময়িকভাবে বয়সের ছাপ চেহারা থেকে দূর করলেও, দীর্ঘমেয়াদি ফল লাভ করা সম্ভব হয় না। সুন্দর ত্বক পেতে চাইলে শুধু অ্যান্টি-এজিং ক্রিম ব্যবহারই যথেষ্ট না। দীর্ঘদিন তারুণ্য ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যকর খাবার, হাঁটাচলা, ব্যায়াম, পজিটিভ চিন্তা করা, মনকে প্রফুল্ল রাখা। আর এই সব কিছুর পাশাপাশি রূপচর্চা। তবেই তারুণ্য ধরে রাখা সম্ভব।

এছাড়াও কিছু কৌশল জানা থাকলে তারুণ্য ধরে রাখতে পারবেন সহজেই। চলুন জেনে নেয়া যাক তারুণ্য ধরে রাখার সেই কৌশলগুলো-

> ২৫ বছর বয়সের পর থেকে ত্বকে তার প্রভাব পরতে শুরু করে। এতে মন খারাপ করার কিছু নেই। পরিবর্তন এবং বিকাশ– এটাই প্রকৃতির নিয়ম। শরীর, ত্বক, মন, অর্থাৎ পুরো মানুষটিই বদলায় ধীরে ধীরে। তাই সেইভাবেই নিজেকে মানিয়ে চলুন। একদমই চিন্তা করবেন না, এতে ত্বকের ক্ষতি হয়।

> বয়স যতই হোক না কেন সময়ের সঙ্গে কিছুটা তাল মিলিয়ে চলা বেশ প্রয়োজন। তবেই তো সমাজে সব বয়সিদের সঙ্গে মিলেমিশে, একসঙ্গে চলা সম্ভব। নিজেকে তরুণ ভাবা এবং সব বিষয়ে আপডেট থাকা অবশ্যই এক্ষেত্রে একটা বড় ব্যাপার।

> সৌন্দর্য চর্চা বা তারুণ্য ধরে রাখতে গ্রিন-টি বা সবুজ চায়ের জুড়ি নেই। এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। নিয়মিত গ্রিন-টি পান শরীরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

> মোটা মানুষ বা যাদের মোটা হওয়ার কারণে নানা অসুখ-বিসুখ রয়েছে, তাদের অনেককেই বলতে শোনা যায় যে জেনেটিক কারণেই নাকি তাদের এ অবস্থা। ব্যাপারটা পুরোপুরি ঠিক নয়, কারণ দেখা গেছে একই পরিবারে দুই ভাই বা দুই বোনের মধ্যে খাদ্যাভাস ও লাইফ স্টাইলের কারণে দু’রকম হয়ে থাকে। কাজেই সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই!

> ভিটেন-হ্যার্ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্বক বিশেষজ্ঞ উলরিকে হাইনরিশ বলেন, বয়স বাড়া মানেই কোনো কিছু পরিত্যাগ করা নয়। বয়সের সঙ্গে পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক, তবে তাতে সৌন্দর্য হারাতে হবে – এমন কোনো কথা নেই৷ বয়সের সঙ্গে ত্বক পাতলা এবং শুস্ক হয়। তাই এমন ক্রিম বা কসমেটিক ব্যবহার করতে হবে যাতে ভিটামিন এ, সি এবং ই-থাকে।

> চর্ম বিশেষজ্ঞদের মতে, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিজেকে দূরে রাখা প্রয়োজন। এতে যে ত্বক সহজে বুড়িয়ে যায়– তা নয়, এর ফলে ত্বকে ক্যানসারও হতে পারে। তাছাড়া আজকাল পরিবেশ দূষণও ত্বকে বিশেষভাবে প্রভাব ফেলে। তাই যতটা সম্ভব দূষণ থেকে নিজেকে দূরে রাখা এবং বাইরে থেকে ফিরে গোসল বা ভালো করে হাত-মুখ ধোয়া উচিত।

> বর্তমানে সৌন্দর্য চর্চায় আবার আগের ট্রেন্ড ফিরে এসেছে। অর্থাৎ প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা। যা সত্যি বেশ কার্যকর। গাছগাছালির পাতা, রস, শেকড় ইত্যাদির তৈরি ভেষজ ক্রিম, পাউডার, তেল নানা কিছু বাজারে পাওয়া যায়। সৌন্দর্য পিপাসুদের জন্য তা বেশ উপকারী।

> সুস্থ আর সুন্দর থাকতে খাওয়া-দাওয়ার ভূমিকা অনেক। মানুষের শরীরে প্রোটিন, ভিটামিন, শর্করা, মিনারেল– এগুলো বেশ প্রয়োজনীয়। তাই সবকিছুই খাওয়া উচিত, তবে পরিমাণ মতো।

> প্রচুর শাক-সবজি, ফল-মূল খাবার তালিকায় থাকা জরুরি। মুখ হচ্ছে শরীরের আয়না। অর্থাৎ শরীরের ভেতরটা ভালো থাকলে চোখে-মুখে তার প্রভাব তো পরবেই। তাই সতেজ থাকতে শাক-সবজি খান।

> শুধু সুন্দর মুখ আর টানটান ত্বকই তারুণ্যের চাবিকাঠি নয়। শরীরটাও থাকতে হবে টানটান। আর সেজন্য চাই নিয়মিত কিছুক্ষণ শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করা। সেই সঙ্গে মুক্ত বাতাস সেবন। শারীরিক এবং মানসিকভাবে ফিট থাকার জন্য বছরে অন্তত একবার ‘মেডিকেল চেকআপ’ করিয়ে নেয়াও অত্যন্ত দরকারি।