সুস্থ থাকার অন্যতম উপায় হলো ব্যায়াম। কিন্তু ব্যায়ামের কথা শুনলেই অলসতা আরো বেড়ে যায়। কারণ, ব্যায়ামের পোশাক পরে সেই মতো প্রস্তুতি নিয়ে বের হওয়া অনেকের কাছে বেশি জটিল ব্যাপার। ঠিক এই কারণেই অনেকের ব্যায়াম করার ইচ্ছা থাকলেও বাস্তবে তা হয়ে ওঠে না।
তবে আশার কথা হলো আপনি যদি তাদের একজন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্যও সমাধান রয়েছে। সকালে ঘুম থেকে জাগার পর বিছানাতেই ব্যায়াম শুরু করুন। বিছানাতেই কিছু সহজ ব্যায়াম করতে পারেন যেগুলোর আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এখানে একটি যোগব্যায়ামের কথা উল্লেখ করা হলো। এটি সকালে বিছানায় করার মাধ্যমে দিন শুরু করুন, যা মনকে শান্ত করে এবং দেহকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। যোগব্যায়ামের নাম হলো মার্জারি আসন।
বিড়ালের আড়মোড়ার ভঙ্গিতে মেরুদণ্ড স্ট্রেচ করার এই আসনটি সাধারণত হাঁটু ভাঁজ করে মাটিতে বসে করা হয়। কিন্তু যারা মাটিতে বসতে পারেন না, তারা চেয়ারে বসেও যোগাসনটি করতে পারেন। এই আসন অভ্যাস করলে শিরদাঁড়ার ওপরের দিকের অংশের সঙ্গে কাঁধের এবং নিচের অংশের সঙ্গে শ্রোণিদেশের সামঞ্জস্য বজায় থাকে।
পদ্ধতি
১. মেরুদণ্ড সোজা করে চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসুন। পা মাটিতে রাখুন দৃঢ়ভাবে। মাথা ও ঘাড় সোজা থাকবে। দুই হাত রাখুন কোলের ওপর। ভুলেও চেয়ারে হেলান দেবেন না। এটি আসন শুরুর প্রাথমিক অবস্থান।
২. দুই হাত টান টান করে দুই হাঁটুর ওপর রাখুন। এবার ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে নিতে পিঠের দিকে হেলে কাঁধ টান টান করে বুক সামনের দিকে আনতে হবে। ঘাড় পেছন দিকে করে মুখ সামান্য উঁচু করুন।
৩. এবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পিঠ কুঁজো করে বুক সামনের দিকে টেনে নিতে হবে। এ সময় চিবুক বুকে ঠেকান। কাঁধও সামনের দিকে ঝুঁকে আসবে। এই অবস্থানে কয়েক সেকেন্ড থাকতে হবে। এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হলো। বেশি স্ট্রেইন না করে ধীরে ধীরে আসনটি করতে হবে। পাঁচ-সাত রাউন্ড অভ্যাস করতে হবে।
৪. অভ্যাস করা শেষ হলে চোখ বুজে কোলের ওপর দুই হাত রেখে কয়েক সেকেন্ড বিশ্রাম নিন। পিঠ, ঘাড় ও বুকের পাঁজরে আরাম অনুভব করবেন। এই আসনটি অভ্যাস করার সময় তাড়াহুড়া করার দরকার নেই। ধীরে ধীরে সইয়ে সইয়ে অভ্যাস করতে হবে।
নিয়মিত আসনটি অভ্যাস করলে শিরদাঁড়া সামনে ও পেছনে উভয় দিকেই নোয়ানো হয় বলে মেরুদণ্ডের স্টিফনেস কমে গিয়ে নমনীয় হয়। পিঠ, ঘাড় ও কোমরের ব্যথা কমে। যেকোনো বয়সে মার্জারি আসন অভ্যাস করা যায়। নিয়মিত অভ্যাস করলে কিডনি ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিতে রক্ত চলাচল বাড়ে বলে এদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।