বাড়তি ওজন কমাতে মেনে চলুন এই টিপসগুলো

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও সঙ্গে ফাস্টফুড, জাঙ্ক ফুড খাওয়ার অভ্যাসতো ছিলই, এর মাঝে ‘সাপে বর’ হয়ে দাঁড়ালো লকডাউন।

বর্তমান দিনে মানুষ নিজের স্বাস্থ্যকে নিয়ে সচেতন হলেও করোনার দৌলতে সেই সচেতনতাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কারণ, লকডাউনের সময়ে সর্বক্ষণ গৃহবন্দী থাকার ফলে দেখা দিয়েছে অলসতা, শরীরে মেদ জমা এবং ওজন বৃদ্ধি।

চিকিৎসকদের মতে, ওজন বাড়তে থাকা, ফ্যাট জমা ও মোটা হয়ে যাওয়া মানেই শরীরে বিভিন্ন সমস্যার জন্ম নেওয়া। হার্ট, লিভার, কিডনি ইত্যাদির সমস্যাও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এক্ষেত্রে, সঠিক সময়ে মানুষ সচেতন না হলে অজান্তেই ঘনিয়ে আসবে বিপদ।

তাই যারা বাড়তি ওজনের সমস্যায় ভুগছেন কিংবা মোটা হয়ে যাচ্ছেন, তাদের ভাত-রুটির পরিমাণ কমিয়ে ফল ও সবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। তার সঙ্গে চাই পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরচর্চা আর নিয়ম করে ৪০ মিনিট দ্রুত পায়ে হাঁটাই হল ওজন কমানোর বিজ্ঞানসম্মত ও সহজ উপায়। তবে এর সঙ্গে মেনে চলতে হবে সঠিক ডায়েট।

বাড়তি ওজন কমাতে অনেকেই খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন বা ভুলভাল ওষুধ কিনে খান। কিন্তু এতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। তাই বাড়তি ওজন বা ফ্যাট কমিয়ে নিজেকে ফিট ও স্লিম রাখতে কিছু টিপস মেনে চলতে পারেন।

দেখে নিন কি করবেন আর কি করবেন না-

প্রচুর পানি পান করুন

পানি আমাদের দেহের বিপাক প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখতে এবং শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন ৪-৫ লিটার পানি পান করুন। দ্রুত ওজন কমাতে দুপুরের খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে ৫০০ মিলিলিটার পানি পান করুন। পাশাপাশি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে ফলের রস ও পানি যুক্ত ফল, যেমন- আনারস, তরমুজ ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খান।

খালি পেটে মেথিজল খান

রোগা হওয়া বা ওজন কমানোর উপায়গুলির মধ্যে অন্যতম হল মেথির পানি পান করা। এতে থাকা প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। ফলে শরীর ভালো থাকে এবং বাড়তি ওজন কমে। আগের দিন রাতে এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে ছেঁকে সেই পানি পান করুন। এটি সকালে খালি পেটে খেতে হবে।

ডায়েট মেনে চলুন

তাড়াতাড়ি রোগা হওয়া ও ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকা থেকে ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়া কমাতে হবে। ভাত এবং রুটির পরিমাণ কমিয়ে সবজি এবং ফল বেশি করে খান। খাদ্যতালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাদ্য, কম ক্যালরি যুক্ত ফল, সবজি এবং দানাশস্য জাতীয় খাদ্য বেশি মাত্রায় রাখতে হবে।

এছাড়াও প্রতিদিন তিনটি আলাদা রকমের ফল, পাঁচটি আলাদা ধরনের শাকসবজি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার বয়স, উচ্চতা এবং শারীরিক ওজন অনুযায়ী ডায়েটে কী কী খাবার যোগ করবেন এবং কোন সময়ে খাবেন তা একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে খাওয়া শুরু করুন।

নিয়মিত শরীরচর্চা

ফ্যাট কমাতে ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই রোজদিন সকালে অন্তত পক্ষে ৪০ মিনিট হাঁটুন এবং ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করুন। স্কিপিং ও সাঁতার রোজদিন করুন।

এছাড়াও, চক্রাসন, হলাসন, অর্ধচন্দ্রাসন, পদহস্তাসন, ত্রিকোনাসন, ধনুরাসন, উত্থিত শিরাসন, উত্থিত পদাসন, পার্শ্ব চন্দ্রাসন, অর্ধমৎসেন্দ্রাসন, সর্বাঙ্গাসন, মৎসাসন, পশ্চিমোত্তানাসন, নাড়ী শোধন ও সূর্যভেদ প্রাণায়াম, সূর্য প্রণাম, খালি হাতে ব্যায়াম বিশেষ করে সামনে, পেছনে ঝোঁকা, ডাইনে বাঁয়ে ঝোঁকা, শরীর মোচড় দেওয়া, শুয়ে সাইকেল চালানো, সিটাপ, ইত্যাদির ব্যায়াম করতে হবে।

ভালো করে ঘুমান

নিজেকে সুস্থ রাখতে ও ওজন কমাতে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অনেক। তাই দিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এটি আপনার ওজন কমিয়ে শরীরকে ফিট রাখতে সাহায্য করবে।

যারা রাত জাগেন তাদের শরীরে মেদ বাড়ার আশঙ্কা বেশি। ঘুমোতে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে কোনও ধরনের মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। ৭টা ৩০ থেকে ৮টা তার মধ্যে ডিনার শেষ করে ১০টার মধ্যে ঘুমান এবং সকালে ৫টায় উঠুন। কারণ, রাতে ভালো ঘুম না হলে এটি আপনার শরীরে মেদ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

আরএম-০১/২৫/০৯ (লাইফস্টাইল ডেস্ক)