ভাস্কর্য ইস্যু নিয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে আ’লীগ!

দেশে মুজিব ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারী ইসলামপন্থীদের সাথে সরকারের পক্ষে দু’জন মন্ত্রী আলোচনা করছেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী বা সমমনা বিভিন্ন সংগঠন রাজনৈতিক প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।

দলটির নেতাদের অনেকে মনে করেন, ভাস্কর্য নিয়ে কোন ছাড় দেয়া হলে, তা তাদের দল বা সরকারের ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে।

আওয়ামী লীগ বা সরকার এই ইস্যু নিয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে দলটির নেতাদের অনেকে মনে করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো ভাস্কর্য ইস্যুতে সরাসরি বক্তব্য দিয়েছেন ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসে দলীয় এক অনুষ্ঠানে।

“বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কথা উঠানোর চেষ্টা হয়েছে। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশের সকল ধর্মের মানুষ সমান সুযোগ নিয়ে চলবে। কাজেই আমি আপনাদের এটুকু বলবো, সবাইকে যে কোন পরিস্থিতি সহনশীলতার সাথেই মোকাবেলা করতে হয়। সেটাই করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা যেমন বলেছেন, একইসাথে তাঁর বক্তব্যে সহনশীলতার কথাও এসেছে।

তবে ভাস্কর্য বিরোধী অবস্থান নিয়ে ইসলামপন্থীরা গত নভেম্বরের শুরুতে মাঠে নামে।

ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিশ এবং হেফাজতে ইসলাম নভেম্বরে কয়েকদিন ধরে সমাবেশ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।

প্রথমদিকে আওয়ামী লীগ বা সরকার কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছিলেন, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

গত ৫ই ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবের নির্মাণাধীন আরেকটি ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা যখন ঘটে, তখন আওয়ামী লীগ রাজপথে নামে।

যদিও আওয়ামী লীগ প্রথমে পরিস্থিতি বোঝার জন্য কিছুটা সময় নিয়েছে।

কিন্তু মাঠে নেমেই দলটি এই ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে তুলে ধরার কৌশল নেয়।

দলটির নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছে হঠাৎ করে এখন ভাস্কর্য ইস্যুকে সামনে আনার বিষয়ে।

এছাড়া যারা ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে, তাদের মধ্যে ইসলামপন্থী কয়েকটি দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটেও রয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক বিষয়কে সামনে এনে ধর্মীয় বিতর্ক এড়ানো সম্ভব হতে পারে বলে দলটির নেতৃত্ব মনে করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেছেন, পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ এবং সরকারকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। দলটিকে শক্ত অবস্থানে থেকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা ছাড়া অন্য পথ খোলা নেই বলে তিনি মনে করেন।

“ভাস্কর্যের যে ইস্যুটা এমুহুর্তে এসে দাঁড়িয়েছে, আমার মনে হয়, এটা অবশ্যই আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আমি আবার এটাও বিশ্বাস করি, এই চ্যালেঞ্জকে আওয়ামী লীগের মোকাবেলা করতে হবেই তাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনে। । কারণ আওয়ামী লীগের আর কোন পথ নাই।”

অধ্যাপক জিনাত হুদা আরও বলেছেন, “বাংলাদেশের মুল ধারার যে রাজনীতি, স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ এবং অগ্রসরমান যে বাংলাদেশ-সেই জায়গা থেকে আওয়ামী লীগকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শক্ত অবস্থান নেয়া ছাড়া আওয়ামী লীগের সামনে অন্য কোন পথ খোলা নেই বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন।

কিন্তু আওয়ামী লীগ ইস্যুটিকে রাজনৈতিক রুপ দেয়ার কৌশল যেমন নিয়েছে, তেমনি একইসাথে ইসলামপন্থীদের মাঝেই রাজনৈতিকভাবে বিভক্তি এনে ভাস্কর্য বিরোধীদের চাপে ফেলার চেষ্টা করেছে।

হেফাজতে ইসলামেরই নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে একটা অংশ সংগঠনটির বাইরে রয়েছে। তাদের সেই দ্বন্দ্বের সুযোগ সরকার নিচ্ছে।

এদিকে বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনেকের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, দলটির তৃণমূল আপোষের পক্ষে নয়। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগের একজন নেত্রী জিনাত সোহানা চৌধুরী বলেছেন, আপোষ করা হলে তা ভিন্ন বার্তা দেবে।

“আমি মনে করি, এসব বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে যাতে কোন আপোষ না হয়, দেশের সার্বভৌমত্ব, সংস্কুতি এবং দেশের সংবিধানের প্রশ্নে যাতে কোন ধরনের আপোষ করা না হয়। আলোচনা হতে পারে। কিন্তু কোন আপোষ নয়।”

আওয়ামী লীগ এবং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মুজিব ভাস্কর্য নির্মাণ থেকে তারা সরে আসবে না। সেজন্য ভাস্কর্য বিরোধীদের ওপর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার এক ধরনের হুমকিও সরকারের দিক থেকে রয়েছে।

অন্যদিকে, এখন শীতে ইসলামপন্থীদের ধর্মীয় সমাবেশ বা ওয়াজ করার মৌসুম। এরইমধ্যে ভাস্কর্য বিরোধী ইসলামপন্থী নেতাদের কয়েকজন বাধা পেয়ে এবং নিরাপত্তার আশংকা থেকে কয়েকটি জায়গায় ধর্মীয় সমাবেশ স্থগিত করেছেন। এই বিষয়টিই তাদের বড় চাপে ফেলেছে বলে তাদেরই অনেকের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে।

যদিও সরকারের দিক থেকে চাপ তৈরির একটা কৌশল দৃশ্যমান হচ্ছে।

কিন্তু দু’পক্ষ থেকেই যোগাযোগের ভিত্তিতে আলোচনাও শুরু হয়েছে।

সিনিয়র মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আলোচনা হলেও তারা ভাস্কর্য নিয়ে কোন ছাড় দেবেন না এবং দুই মন্ত্রী আলোচনায় সেই বার্তাই দিয়েছেন।

“আলোচনায় সেখানে তাদের সুস্পষ্টই বলা হয়েছে, ভাস্কর্য করার অবস্থান থেকে আওয়ামী লীগ কোনদিনই সরে আসবে না। তারা বলেছে যে, ঐ এলাকায় কয়েকটা মাদ্রাসা আছে ফলে একটু দূরে করার জন্য। এগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু সারাদেশে ভাস্কর্য হবে-তা করতে দেয়া হবে না-সেটা নিয়ে আলোচনার কোন সুযোগ নাই। এটা তাদের সুস্পষ্টই বলা হয়েছে” বলে মন্ত্রী মি: রাজ্জাক বলেন।

এখন সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী-দু’জন মন্ত্রী ইসলামপন্থীদের সাথে আলোচনা চালাচ্ছেন সমাধানের ব্যাপারে।

আওয়ামী লীগ বা সরকার তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারবে নাকি সমঝোতা করবে-এমন সব প্রশ্নে নানা আলোচনা রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামী লীগ নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষতার ধারক বাহক হিসাবে মনে করে। দলটি তাদের ইসলামের রক্ষক হিসাবেও দেখাতে চায়।

কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম আহমদ সফীর নেতৃত্বে ঢাকা অবরোধের ডাক দিয়ে শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিল ২০১৩ সালে। এরপর হেফাজতের সাথে শেখ হাসিনার সরকারের সখ্যতা গড়ে উঠেছিল এবং দৃশ্যমানও হয়েছিল।

কট্টরপন্থীদের সাথে ভারসাম্য রক্ষা করার কারণে ধর্মনিরেপেক্ষতার চেতনা সংকটে বা হুমকির মুখে পড়ছে বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা রয়েছে।

ড: রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় তাদের বিভিন্ন সময় কৌশল নিতে হয়েছে। কিন্তু তিনি দাবি করেন, তারা কখনও আপোষ করেননি।

“আওয়ামী লীগ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। এই আদর্শকেই সব সময় তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। এই নীতি থেকে দল কখনও বিচ্যূত হয়নি। এ ব্যাপারে আপোষেরও কোন প্রশ্ন ওঠে না। অনেক সময় হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের কৌশল নিতে হতে পারে। কিন্তু মুল চেতনা এবং দর্শন থেকে আমরা কখনও বিচ্যূত হইনি।”

আওয়ামী লীগ এবং ইসলামপন্থীরা যখন আলোচনা চালাচ্ছে, তখন দুই পক্ষ থেকেই ছাড় দেয়ার প্রশ্ন আসে।

এই আলোচনায় রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা আওয়ামী লীগকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। দলটির নেতারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতেই দু’জন মন্ত্রী ইসলামপন্থীদের সাথে আলোচনা চালাচ্ছেন।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগ আলোচনায় যখন বসেছে, তখন তাদের কোন না কোন ছাড় দিতে হতে পারে।

লেখক গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে থাকার প্রশ্ন রয়েছে। তিনি মনে করেন, শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ইস্যু হওয়ার কারণেই আওয়ামী লীগ আপোষ করা না করার প্রশ্নে দোটানায় পড়েছে।

“ক্ষমতায় থাকার জন্যে এরা অনেক সময় আপোষ করে। কিন্তু এখানে সমস্যাটা হয়ে গেলো যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। অন্য কোন বিষয় হলে হয়তো এতদিনে আপোষ করেই ফেলতো। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য হওয়ায় অত সহজে তারা এটা গিলতে পারছে না এবং উগরাতেও পারছে না। এরকম একটা দোটানার মধ্যে আছে” বলে মি: আহমেদ মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেছেন, “যে ইস্যুতে এরা বিরোধিতা করছে, এই বস্তাপঁচা মধ্যযুগীয় মোল্লাতন্ত্র কোনভাবেই আমাদের স্বাধীন দেশে গ্রহণযোগ্য না।”

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই হেফাজতের দাবির মুখে সুপ্রিমকোর্ট চত্বর থেকে গ্রিক দেবীর আদলে নির্মাণ করা ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি উদাহরণ হয়ে রয়েছে।

কিন্তু এখন শেখ মুজিবের ভাস্কর্য নিয়ে কোন আপোষ করা হলে দেশে সব ধরনের ভাস্কর্যই হুমকির মুখে পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেছেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিলে তা সংকট তৈরি করে বলে তিনি মনে করেন।

“একটি গোষ্ঠীর মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে কোন রাজনৈতিক দল টিকতে পারেনি। পাকিস্তান মুসলিম জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক ছিল, টিকতে পারেনি। বিএনপিও ধর্মকে নিয়ে অনেক খেলেছে, টিকতে পারেনি, এরশাদও টিকতে পারেনি। সুতরাং আওয়ামী লীগের বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাতো আছেই।”

তিনি আরও বলেছেন, “আ্ওয়ামী লীগের পরিস্কার হওয়া উচিত, এই অঞ্চলের মানুষ ধর্মকে আশ্রয় করেই বাঁচবে, সেটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু ধর্মান্ধ গোষ্ঠী বা ধর্মের অপব্যাখ্যা এবং ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার-এটাকে আওয়ামী লীগকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে।”

এই প্রশ্ন রয়েছে দলটির ভেতরে।

তবে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিরা এখনকার সংকট কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রেও তাদের দলের নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর ভরসা করছেন।

দলটির একজন কেন্দ্রীয় নেত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, ভাস্কর্য নির্মাণের অবস্থান ধরে রেখে পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব হবে বলে তারা বিশ্বাস করেন।

“আমার মনে হয়, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শক্ত হাতে যেভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে এ ধরনের বিষয়গুলোকে তিন ঠাণ্ডা মাথায় ওভারকাম করবেন। সেখানে আমরাতো উপলব্ধি করতে পারছি, যেখানে বাংলাদেশের মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যে কুসংস্কারগুলো আছে, সেগুলো কাটিয়ে নারীরাও অনেকদূর এগিয়ে গেছে। অন্যদিকে একটা শ্রেণীর পিছনে ঠেলার চেষ্টা কিন্তু সবসময়ই থাকছে। সেখানেই তারা ধর্মের বিষয় ব্যবহার করছে” বলে তিনি মনে করেন।

ইসলামপন্থীদের সাথে আলোচনার প্রশ্নে তিনি বলেছেন, “আমার মনে হয়, নেত্রী তাদেরকেই বোঝাতে চাইছেন যে তারা কি কারণে, কার ইন্ধনে এসব করছে। তাদের সাথে কোন না কোনভাবে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে।”

আলোচনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর যে বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, তাতে সমঝোতা করার একট ইঙ্গিত রয়েছে।

ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকায় একটি মসজিদ এবং কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে মুজিব ভাস্কর্য নির্মাণ করার ব্যাপারে ইসলামপন্থীরা সরকারকে আগেই প্রস্তাব দিয়েছে। আলোচনাতেও সেই প্রস্তাব এসেছে।

এই প্রস্তাব সরকার বিবেচনা করতে পারে- এমন একটা ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।

ভাস্কর্যবিরোধীদের অন্য সুবিধা দিয়ে সমাধানের ভিন্ন কৌশলও সরকারের থাকতে পারে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক রওনক জাহান।

তিনি বলেছেন, ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন এরআগেও বিভিন্ন সময় ইস্যু সৃষ্টি করার পর সরকারের সাথে সখ্যতা গড়ে কওমী মাদ্রাসার ডিগ্রীর স্বীকৃতি আদায় করাসহ নানা সুবিধা নিয়েছে। এখনও তেমন কিছু দাবি আদায়ের ভিত্তিতেও সমঝোতা হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

“এখন ইসলামী দল যেহেতু বলছে, তারা আলোচনা করতে চায় এবং আলোচনা হচ্ছে। তারমানে এই নয় যে ইসলামী দল যা চাচ্ছে, তাই করতে হবে। কারণ হচ্ছে, হেফাজত এবং অন্যরা আরও অন্য কিছু সুযোগ সুবিধা হয়তো নিতে চাচ্ছেন। কিন্তু সেগুলোতো আর বাইরে প্রকাশ্য নয়। অতএব ভাস্কর্য ইস্যুতে হয়তো সরকারকে ছাড় নাও দিতে হতে পারে” বলেন অধ্যাপক রওনক জাহান।

মুজিব ভাস্কর্য নির্মাণ হবে-এই অবস্থানে থেকেই ইসলামপন্থীদের সাথে আলোচনায় সমাধান সম্ভব হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন।

এখন যদি আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হয়, এরপরও ভবিষ্যতে আর প্রশ্ন উঠানো হবে না-সেই নিশ্চয়তা থাকবে কিনা-এই প্রশ্ন থেকেই যায়।

এসএইচ-০৫/১৯/২০ (কাদির কল্লোল, বিবিসি)