সোনা লুট করে চুরির নাটক!

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টমসের গুদামে সুরক্ষিত লকার থেকে সাড়ে ৫৫ কেজি স্বর্ণ লুট করেছে কাস্টমসেরই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি চক্র। স্বর্ণ লুট তথা গায়েবের এ কাণ্ড গত ২০ আগস্ট জানা গেলেও তা গোপন রেখে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সেটি প্রকাশ পায় গত রবিবার। এখন পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসছে এই লুটপাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তার।

জানা গেছে, সিসি ক্যামেরা বন্ধ রাখাসহ লুটের সব রকম আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করেছে লুটেরাচক্রটি। এতে জড়িত সন্দেহে কাস্টমসের ৪ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাসহ ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। থানাপুলিশের পাশাপাশি মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশসহ একাধিক সংস্থা।

এদিকে এই হরিলুট নিয়ে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর কাস্টমস গুদামের ভোল্টে জমা থাকা অবশিষ্ট ৫৫ কেজি স্বর্ণ গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

এদিকে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় একটি চুরির মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি শুল্ক বিভাগের এক যুগ্ম কমিশনারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদসাধ্যমকে বলেন, গত ২০ আগস্ট কাস্টমসের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা গুদামের লকারে দেখতে পান ৬টি চালানের মধ্যে ৯০টি স্বর্ণের বার নেই। বিষয়টি চেপে গিয়ে তারা সুরাহা করার চেষ্টা করেন। স্বর্ণবার উধাওয়ের এ কাণ্ড কাস্টমসের অধিকাংশ কর্মকর্তাই জানতেন। এর পর একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল- আরও চালান থেকে একইভাবে দীর্ঘদিন ধরেই স্বর্ণ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সম্প্রতি ভল্টে রাখা স্বর্ণ যাচাই-বাছাই হওয়ার কথা ছিল। এ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখেন স্বর্ণ উধাওয়ের বিষয়টি। পরে তারা হিসাব করে দেখেন ৫৫ কেজি স্বর্ণ নেই।

পুলিশ বলছে, স্বর্ণ লুটের বিষয়ে আটককৃতদের বক্তব্যে বিস্তর গড়মিল পাওয়া গেছে। প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন। নির্দিষ্ট কিছু সময়কালে তারা কোথায় অবস্থান করছিলেন- এমন প্রশ্নে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপ্ত তাদের প্রকৃত অবস্থান কোথায় ছিল, তা জানানো হলে মুখে তালা এঁটে রাখছেন। এতে সন্দেহ আরও বেশি করে দানা বাঁধছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, এই স্বর্ণ চুরির আলামত নেই বললেই চলে। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার- কাস্টম হাউসের নিজস্ব গুদামে যার-তার প্রবেশের সুযোগ নেই। এখানে কাস্টমসের নির্দিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই কেবল যেতে পারেন। আমাদের প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বলছে, কাস্টমসের এ গুদাম থেকে বাইরের কেউ এসে স্বর্ণ নিয়ে যেতে পারবেন না। কোনো যন্ত্রপাতি ছাড়া যেসব আলমারিতে স্বর্ণ ছিল, সেগুলো ভাঙা খুবই কঠিন। সেখানে যেসব যন্ত্রপাতি ছিল. তা দিয়েও আলমারি ভাঙা সম্ভব না।

ডিসি আরও বলেন, ধরেন প্রতিটি ডিএম (ডিক্লারেশন মেমো) এ দশটি স্বর্ণ বার ছিল। চোর চুরি করলে তো দশটা বারই নিয়ে যাবে। সে ওখান থেকে তো একটি-দুটি করে নেবে না। কাস্টমসের তথ্যমতে, ডিএম থেকে ‘আংশিক স্বর্ণ চুরি’ হয়েছে। এখানেই প্রশ্ন জেগেছে- চোর বাইরের নাকি ভেতরেরই কোনো অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী? এটাই এখন তদন্তের বিষয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমানবন্দর কেপিআইভুক্ত এলাকা। পুরো এলাকায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ সরকারি বেশ কয়েকটি সংস্থা কাজ করে। এত নিরাপত্তার মধ্যে গুদাম থেকে স্বর্ণ চুরি হওয়ার বিষয়টি বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরের ভেতরে শুল্ক বিভাগে দুটি গুদাম বা লকার রয়েছে। এর মধ্যে নিচতলায় শুল্ক বিভাগের স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীদের বের হওয়ার পথে তল্লাশি টেবিলের পাশে ছোট একটি লকার আছে। সেখানে মূলত তল্লাশির সময় তাৎক্ষণিকভাবে জব্দ করা পণ্য রাখা হয়। তবে স্বর্ণ বা বেশি মূল্যবান সামগ্রী হলে সেটা নিচতলায় ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ শাখার পাশেই শুল্ক হাউসের গুদামে নিয়ে রাখা হয়। গুদামের ভেতর আলাদা লকার রয়েছে। ওই গুদামের দায়িত্ব পালন করেন চার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও চার সিপাহি।

এই ৪ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হলেন- মো. মাসুদ রানা, মো. সাইদুর রহমান শাহেদ, মো. শহিদুল ইসলাম ও আকরাম শেখ। চার সিপাহি হলেন- মো. রেজাউল করিম, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, মো. আফজাল হোসেন ও নিয়ামত হাওলাদার।

পুলিশ উপরোল্লিখিত ৮ জনকেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রত্যেককে পৃথকভাবে এবং একত্র করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্যই বেরিয়ে আসছে। তবে তারা ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য আমাদের প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপ্ত তথ্যের সঙ্গে মিলছে না।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ আমাদের সময়কে বলেন, চুরির বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশ ছায়া তদন্ত করছে। একাধিক টিম কাজ করছে। কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনবে পুলিশ।

জানা গেছে, বিমানবন্দরের স্বর্ণ চুরি যাওয়া ওই ভল্টের দায়িত্বে দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন দুই সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান শাহেদ ও মো. শহিদুল ইসলাম। সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ আদেশে তাদের দুজনকে বদলি করে একই পদমর্যাদার আকরাম শেখ ও মাসুদ রানাকে দেওয়া হয় দায়িত্ব; কিন্তু তারা গুদামে সংরক্ষিত সামগ্রীর হিসাব নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত আকরাম ও মাসুমকে বুঝিয়ে দিতে গড়িমশি করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে ঢাকা কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার লুবানা ইয়াসমিন গত ২১ আগস্ট শহিদুল ও সাহেদের বদলির আদেশ গুদামের মূল্যবান সামগ্রী বুঝিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করেন। স্বর্ণ উধাওয়ের ঘটনায় এই চারজনকেই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

শুল্ক বিভাগের ভাষ্য অনুযায়ী- চুরি হওয়া এসব স্বর্ণ ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয়েছে; কিন্তু এতদিন ধরে এত পরিমাণ স্বর্ণ বিমানবন্দরের গুদামে রাখা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ঢাকা কাস্টমস সূত্র জানায়, বিমানবন্দর থেকে চোরাচালানের স্বর্ণ উদ্ধার হলে সেটা জব্দ তালিকা করে যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে পাঠানো হয়। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিতে হয়, এর পর তারা সময় দিলে সেদিন কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সেখানে পৌঁছানো হয়। সাধারণত এক-দুই দিনের মধ্যে পাঠানো হয়। এর বাইরে যাত্রীদের আনা (ব্যাগেজ রুলসের আওতায়) স্বর্ণ ঠিকভাবে শুল্ক পরিশোধ করতে না পারলে বা নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি আনলে সেটা ছাড়িয়ে নেওয়ার আগ পর্যন্ত ওই গুদামে রাখা হয়। অনেক ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকতা বা আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে সোনা ছাড়িয়ে নিতে কারও কারও কয়েক মাস লেগে যায়। সাত-আট মাস বা এক বছরও লেগেছে, এমন ঘটনাও রয়েছে। কিন্তু চুরি হওয়া স্বর্ণের মধ্যে দু-তিন বছর আগের সোনাও ছিল বলা হচ্ছে। এত দিন স্বর্ণ গুদামে রাখাটা অস্বাভাবিক আচরণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা শুল্ক বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মাসুদ রানা দায়িত্বরত যুগ্ম কমিশনারকে বিমানবন্দরের ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ শাখার কাছে শুল্ক বিভাগের গুদামের মূল্যবান পণ্যসামগ্রী রাখার একটি স্টিলের আলমারির লকার ভাঙা বলে জানান। মাসুদ রানা যুগ্ম কমিশনারকে আরও জানান, প্রতিদিনের মতো আটক পণ্য গুদামে রেখে তিনিসহ চারজন রাত সাড়ে ১২টার দিকে শুল্ক বিভাগ ছেড়ে চলে যান।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এমন সংবাদ পেয়ে ওই গুদাম পরিদর্শনে যান ঢাকা শুল্ক বিভাগের কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার ও যুগ্ম কমিশনার। তারা গিয়ে গুদামের একটি স্টিলের আলমারির লকার ভাঙা দেখেন। গুদামের পূর্ব পাশে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের বাতাস যে অংশ দিয়ে বের হয়, সেখানকার টিনের কিছু অংশ কাটা দেখতে পান। পরে তারা গুদামের দায়িত্বে থাকা চার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও চার সিপাহিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো সন্তোষজনক উত্তর না পেয়ে শুল্ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুদাম থেকে কোনো মূল্যবান বস্তু চুরি হয়েছে কিনা, সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশনা দেন।

পরে গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা আটকের রসিদ (ডিএম) মোতাবেক দেখতে পান ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে আটককৃত ৫৫ কেজি ৫১ গ্রাম স্বর্ণ চুরি হয়েছে।

শনিবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে পরদিন সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে কে বা কারা গুদামের আলমারি লকার ভেঙে স্বর্ণ নিয়ে যান বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। শুল্ক বিভাগ বলছে, চুরি হওয়া এই স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

ঢাকা কাস্টমস এর প্রিভেন্টিভ টিমের ডেপুটি কমিশনার সৈয়দ মোকাদ্দেস হোসেন বলেন, ঘটনায় যারা দোষী তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। চুরি যাওয়া স্বর্ণের মধ্যে স্বর্ণালঙ্কার ও স্বর্ণের বার ছিল। এ ঘটনার পরে আমরা সেখানে কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। পুরো গোডাউনটা চেক করি যে, কোনো সমস্যা আছে কিনা। এ সময় এখানে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন।

তিনি বলেন, এল শেপ গুদামটির মাথায় যেখানে এসি আছে সেখানে ১টি গর্ত দেখা গেছে। সেটা দিয়ে মানুষ প্রবেশ করা সম্ভব। এখানে কর্মকর্তা বা অন্যরা জড়িত থাকতে পারে। কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করা হবে। এখনই বলা যাচ্ছে না- কী ঘটেছে।

ঢাকা কাস্টম হাউসের কমিশনার একেএম নুরুল হুদা আজাদ বলেছেন, গুদামে অনেকগুলো লকার থাকলেও স্বর্ণ চুরি হয়েছে একটি লকার থেকে। এসব স্বর্ণ ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে। আট দিন আগে গুদামটি অটোমেশনের কাজ শুরু হয়। এই কাজের অংশ হিসেবে গুদামে থাকা স্বর্ণ গণনার কাজ শুরু হয়। স্বর্ণ চুরির ঘটনা আগেই ঘটেছে। গুদামের অটোমেশনের কাজ শুরু হওয়ায় সেটা ধরা পড়বে; তাই লকার ভাঙার ‘নাটক’ তৈরি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর একটি সুরক্ষিত স্থাপনা। এখানে বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করে স্বর্ণ চুরি করার মতো সুযোগ নেই। যে সংস্থা স্বর্ণের হেফাজতকারী তারাই বলতে পারবে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ কীভাবে গোডাউন থেকে হাওয়া হয়ে গেল। ওখানে কাস্টমসের লোক ব্যতীত অন্য কোনো সংস্থার প্রবেশের সুযোগই নেই।

এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একইভাবে বেনাপোল কাস্টম হাউসের সুরক্ষিত লকার ভেঙে ২০ কেজি স্বর্ণ চুরি করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় কাস্টমসের সাত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তখনও ভল্ট ভাঙার সময় কাস্টম হাউসের সব সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদামের সিসি ক্যামেরা পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করে স্বর্ণ গায়েব করা হয়েছে, যাতে সিসি ক্যামেরায় কোনো চুরির সাক্ষ্য না থাকতে পারে। আর এভাবে চুরির আলামত নষ্ট করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর রাতের যে কোনো সময় বেনাপোল কাস্টম হাউসের পুরনো ভবনের দ্বিতীয় তলার গোডাউনের তালা ভেঙে চোরেরা ভেতরে যায়। পরে ভল্টের তালা ভেঙে ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক তিন গ্রাম স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে যায়, যার মূল্য প্রায় ১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

শাহজালাল বিমানবন্দরের কাস্টমস গুদাম থেকে স্বর্ণ গায়েবের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এখন তারা দেশের সব কটি কাস্টমস গুদামে থাকা জব্দ করা পণ্যের শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করার নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে।

এসএইচ-০৩/০৫/২৩ (অনলাইন ডেস্ক সূত্র : আমাদের সময়)