দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা কিছুটা কমেছে!

দেশে গত বছরের তুলনায় এ বছর বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা কিছুটা কমে আসলেও একেবারে বন্ধ হয়নি। বরং আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গিয়েছে পুলিশ, র‍্যাব ও কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা। বন্ধ হয়নি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাও।

সবমিলে ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এসে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবাধিকার পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে না, এমনটাই উঠে এসেছে আলাদা দুটি মানবাধিকার সংগঠনের পর্যবেক্ষণে।

শনিবার সকালে আলাদা সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে দুটি বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)।

সংবাদ সম্মেলনে তারা ২০২৩ সালে দেশের নির্বাচনী ও রাজনৈতিক সহিংসতার চিত্রও তুলে ধরে।

একইসাথে রিপোর্টে উঠে এসেছে নারী ও শিশু নির্যাতন, পোশাক শ্রমিক সংক্রান্ত তথ্য, সীমান্তে হত্যার পরিসংখ্যান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক নির্যাতন, সীমান্তে হত্যা এবং সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের চিত্রও।

তবে এই দুটি সংস্থার তথ্য ও উপাত্তে বেশ কিছু জায়গায় পার্থক্য রয়েছে।

র‍্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর কিছুটা কমে এসেছে বন্দুকযুদ্ধ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন – এমএসএফ বলছে ২০২২ সালে যেখানে মোট ২২টি বন্দুকযুদ্ধে ১৫ জন মারা যায়, সেখানে এ বছর ১৫টি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে, যাতে মারা গিয়েছে ৭ জন।

কিন্তু আইন ও সালিশ কেন্দ্র – আসকের হিসেবে ২০২২ সালে ১৯ জন নাগরিক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল, বিপরীতে এ বছর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ২০ জন।

তবে এই দুটি সংস্থার হিসেবেই বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা।

আসক বলছে ২০২২ সালে যেখানে কারা হেফাজতে মারা গিয়েছিলেন ৬৫ জন, সেখানে এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫ জনে। এছাড়া পুলিশের হেফাজতে ১৩ জন, র‍্যাবের হেফাজতে ২ জন ও ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের হেফাজতে ৩ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

অন্যদিকে এমএসএফের হিসাবে, কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে, ২০২২ সালে যেখানে কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ৯৩টি, এক বছরের ব্যবধানে সেটি বেড়ে এখন ১৬২টি। এছাড়া ২০২২ সালের মতো ২০২৩ সালেও ১৭ জন পুলিশ হেফাজতে মারা গিয়েছেন বলে তাদের রিপোর্টে উঠে আসে।

সম্প্রতি কারা হেফাজতে একের পর এক বিএনপি নেতার মৃত্যুর ঘটনা আলোচনায় উঠে এসেছে। বিএনপির অভিযোগ ২৮শে অক্টোবরের পর থেকে দলের অন্তত ৮ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার কারা হেফাজতে মৃত্যু ঘটেছে। বিএনপি এবং নিহতের পরিবারগুলো বলছে নির্যাতনের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাদের।

এসব মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে মানবাধিকার কমিশনও। অবশ্য কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যারা নিহত হয়েছেন তারা কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও নেয়া হয়েছিলো।

থেমে নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, গুম বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা। বরং এমএসএফের হিসেবে ২০২৩ সালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক অপহরণের অভিযোগ আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ বেড়েছে। ২০২২ সালে যেখানে এরকম অপহরণ ও নিখোঁজের অভিযোগ ছিল ৩০টি, সেখানে এ বছর এরকম ৮৯টি ঘটনার তথ্য তারা পেয়েছে।

এক্ষেত্রে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৩ সালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ, হুম ও নিখোঁজের শিকার হয়েছের নয় জন। যাদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ছয় জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এবং ফিরে এসেছেন তিন জন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি দুটি সংস্থা থেকেই বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে।

যাতে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা যে কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যেমন- বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমের অভিযোগ, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এখতিয়ার বহির্ভূত আচরণ ইত্যাদির অভিযোগ উঠলে তা দ্রুততার সাথে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে এবং সম্পৃৃক্তদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শাস্তি প্রদান করতে হবে।”

তবে আইন ও সালিশ কেন্দ্র এটাও বলছে এ পর্যন্ত সংঘটিত সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তারা তাদের পর্যবেক্ষণে তুলে ধরে, নিজ বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিজ বাহিনী কর্তৃক তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য কিংবা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে না।

অনেকটা একই রকম সুপারিশ মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনেরও।

এছাড়া কারা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা কমাতে, কারাগারসমূহের অভ্যন্তরে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি যথাযথ তদন্ত করে তার পূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচারিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও তাদের সুপারিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুটি সংস্থার পর্যবেক্ষণেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নানান রকম উদ্বেগ ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র তাদের সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই উল্লেখ করে, প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল এ নির্বাচন বর্জন করায় ইতিমধ্যে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা এবং অংশগ্রহণমূলকতা নিয়ে দেশে বিদেশে নানা প্রশ্ন ও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।

আসক বলছে এ বছরও বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, গায়েবি মামলা, হামলা, গণগ্রেপ্তার, পরিবহন ধর্মঘট ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে।

গণমাধ্যম সূত্রে সংস্থাটি ২০২৩ সালে রাজনৈতিক সংঘাতে নিহতের তথ্য তুলে ধরে। যেখানে বলা হয় এ বছর রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৪৫ জন এবং আহত হয়েছে কমপক্ষে ৬৯৭৮ জন।

আর এমএসএফ বলছে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২০২৩ সালে মারা যায় ৪২ জন এবং আহত হয় প্রায় ৫ হাজার মানুষ।

একই সময়ে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১৩৮টি, যাতে ১০ জন নিহত ও ৬৫৯ জন আহত হয়। যার বেশিরভাগই ঘটেছে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসে।

তাদের সুপারিশ হল, “নির্বাচনী সহিংসতা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”

আর আসক মনে করে রাজনীতি বা সংগঠন করার অধিকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ বা সভা-সমাবেশ আয়োজনের ক্ষেত্র ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।

একই সাথে কাঙ্খিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও মানবাধিকার সুনিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার তাগিদ তাদের।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ২০২৩ সালের আরেকটি উদ্বেগজনক বিষয়। বিশেষ করে ধর্ষণ, ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা, যৌন হয়রানি, পারিবারিক নির্যাতনের নানা ঘটনাসহ শিশু হত্যা ও নির্যাতনের অনেক ঘটনাই ঘটেছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৩ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ৫৭৩ জন নারী।

এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৩ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন পাঁচ জন। ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছে আরো ১২৯ জন। এর মধ্যে ধর্ষণের চেষ্টার পর হত্যা করা হয় তিন জনকে, ধর্ষণের চেষ্টার কারণে আত্মহত্যা করে তিন জন।

এছাড়া আসক বলছে ২০২৩ সালে ধর্ষণ ও নির্যাতনের কারণে নিহত হয় কমপক্ষে ৪৮৪ জন শিশু। আর বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয় কমপক্ষে ১০১২ জন শিশু।

এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩১৪ জন শিশু, ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে ১১৮ জন শিশু এবং বলাৎকারের শিকার হয়েছে ৭৫ জন ছেলে শিশু।

অন্যদিকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের হিসেবে নারী ও শিশু মিলিয়ে ২০২৩ সালে মোট ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৮৯৯ জন।

এছাড়া ২০২৩ সালে ৩২ জন নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের কারণে মারা যায় ৬ জন, এছাড়া রহস্যজনক মৃত্যু হয় ১ জনের।

অন্যদিকে এ বছরে অ্যাসিড নিক্ষেপের শিকার হয়েছেন ১০ জন নারী।

এসব অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ঠেকানে সরকারকে আরও কার্যকর ভূমিকা নেয়ার সুপারিশ করেছে এমএসএফ।

আর আসকের সুপারিশ, নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করতে বিদ্যমান বৈষম্যমূলক আইনগুলোতে পরিবর্তন আনতে হবে। পাশাপাশি অনলাইনে নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানি রোধে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র তাদের পর্যবেক্ষণে বলেছে, সারা বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, আগের বছরগুলোর মত এ বছরও নাগরিকের মত প্রকাশ এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হবার ও প্রতিবাদ করার অধিকার বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার অব্যাহত ছিল।

তারা মনে করে গত ১৮ই সেপ্টেম্বর আইনটি রহিত করে সাইবার সিকিউরিটি আইন নামে যে আইনটি সংসদে পাশ হয়েছে সেখানেও নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সুপারিশসমূহ প্রতিফলিত হয়নি।

তবে এই আইনে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২২ সালে মামলা ও গ্রেফতারের সংখ্যা কমে এসেছে বলে জানায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন। তারা বলছে ২০২২ সালের ৮২ মামলায় ৭৭ জন গ্রেফতারের বিপরীতে ২০২৩ সালে মামলা ৬২ মামলায় গ্রেফতার হয় ৬৩ জন।

তবে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। বছরজুড়ে ৩১২ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও পেশাগত কাজ করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। আগের বছর যে সংখ্যাটা ছিল ২৬৫ জন।

আসকের হিসেবে বছরজুড়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ৭৮ জন সংবাদকর্মী। এছাড়াও সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক লাঞ্ছিত ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বাধা প্রদানের শিকার হয়েছেন ২২ জন সাংবাদিক।

এছাড়া তাদের পর্যবেক্ষণে বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ ১০৪তম বারের মতো পেছানোর বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো মনে করে ২০২৩ সালে শ্রমিক অধিকারেরও লঙ্ঘন ঘটেছে। চলতি বছরের নভেম্বরের শুরুতে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে মিরপুর, আশুলিয়া, চন্দ্রা, গাজীপুর ও অন্যান্য এলাকার অন্তত ৩০০টি পোশাক কারখানা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছে।

এরই মধ্যে শ্রমিক আন্দোলন জোরদার হলে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হলে আইশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ৩ জন শ্রমিক নিহত হয়।

আসক মনে করে মজুরি বাড়ানোর দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন করার ন্যায্য অধিকার রয়েছে,কিন্তু সেই আন্দোলনে গুলিবর্ষণ করে শ্রমিক মেরে ফেলা সম্পূর্ণভাবেই শ্রমিক অধিকারের লঙ্ঘন।

এমএসএফ বলছে এ বছর মারা যায় মোট ৪ জন পোশাক শ্রমিক, এছাড়া আহত হয় ১০৫ জন। তারা পোশাক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলার তথ্যও তুলে ধরেছে। বলা হয় মোট ৪১ মামলায় আসামী করা হয় ১৬৫০০ জনকে, আর গ্রেফতার করা হয় ১২১ জনকে।

তাদের সুপারিশ, বিক্ষোভকারীদের দমনে ও সহিংস কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ না করে দায়িত্বশীল ও সংবেদনশীল ভূমিকা পালন করে হতাহতের ঘটনা কমিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সচেষ্ট থাকা উচিত।

দুটি মানবাধিকার সংস্থার পর্যবেক্ষণেই সীমান্ত পরিস্থিতি উঠে এসেছে। যেখানে ২০২২ সাল থেকে ২০২৩ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন বলছে ২০২২ সালে সীমান্তে ১৭ জন নিহত হলেও এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। আহতের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, ২০২২ সালে ১৬ জন আহত হলেও এ বছর তা ৩২ জনে ঠেকেছে।

আর আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসেবে ২০২৩ সালে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক ৩০ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন, মারাত্মক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩১ জন।

এসএইচ-০১/৩১/২৩ (অনলাইন ডেস্ক, বিবিসি)