নতুন মন্ত্রীদের পরিচয় কী?

দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু নতুন মুখ রয়েছে। তাদের অনেকেই প্রথমবারের মতো মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নিয়েছেন।

দায়িত্ব পাওয়া নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বলছেন, যে দায়িত্ব পেয়েছেন তা যথাযথভাবে পালন করাটাই হবে তাদের প্রধান লক্ষ্য। তাদের আগের অভিজ্ঞতা নতুন দায়িত্ব পালনে সহায়ক হবে বলেও মনে করেন তারা।

এবারের ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো যারা মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের সংখ্যা মোট ১৪ জন। এদের মধ্যে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীও রয়েছেন।

আব্দুস শহীদ
মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুস শহীদ। তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এর আগে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।

শহীদ বলেন, ১৯৬২ সাল থেকেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।

তিনি ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদে মৌলভীবাজার-৪ আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সেসময় সংসদে বিরোধী দলীয় এমপি ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগের হয়ে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এই সংসদে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করেছিল। এরপর পর্যায়ক্রমে ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

সংসদ সদস্য থাকার সময় একাধিকবার হুইপ ও চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তবে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন এবারই প্রথম।

শহীদ জানান, তিনি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ গণমহাবিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। তবে এই আয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হওয়ায় পরে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। এছাড়া ফিশারিজ, চা বাগান, লেবু বাগানের ব্যবসা রয়েছে তারা।

“এসব কিছুই কৃষি উৎপাদনের সাথে জড়িত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আমাকে এ দায়িত্ব দিয়েছেন, তাহলে হয়তো কোনো না কোনোভাবে ধারণার মধ্যে রাখছে এইটা।”

তিনি বলেন, সব দায়িত্ব পালন করতে গেলে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। জিডিপির বেশিরভাগ প্রবৃদ্ধি কৃষিখাত থেকেই আসে বলে এ খাত নিয়ে কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জ বেশি আসবে।

তবে দায়িত্ব পালনের সময় প্রান্তিক কৃষকদের উন্নয়নেই বেশি জোর দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। এনিয়ে মোট চার বার সংসদ সদস্য হয়েছেন তিনি।

চলতি মন্ত্রিসভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।

শুরু থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন মি. মোকতাদির। ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরের বছর তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তিনি আহতও হন। পরে ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠিত হওয়ার পর ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন তিনি।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব ছিলেন তিনি।

২০১০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর আসনের উপ-নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পরে ২০১৪ ও ১৮ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এই সময়ে তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।

আব্দুর রহমান
ফরিদপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুর রহমান। তিনি এ নিয়ে তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একই সাথে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন তিনি।

এর আগে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ এবং ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদেও এমপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

রহমান পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তার জন্ম ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলায়।

আব্দুস সালাম
ময়মনসিংহ-৯ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম। তিনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এর আগে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন সুনামগঞ্জের সংসদ সদস্য এম এ মান্নান।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, মি. সালাম সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর ব্রাজিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং নির্বাচনে জয় লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে নির্বাচনে অংশ নিলেও তিনি পরাজিত হন।

পরে ২০০৮ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৩ সালে তিনি নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

তবে বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য হলেও এবারই প্রথম মন্ত্রী হলেন তিনি।

গোয়েন্দা বিভাগসহ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন আব্দুস সালাম। এছাড়া স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি।

মো. জিল্লুল হাকিম
রাজবাড়ী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয় পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মো. জিল্লুল হাকিম।

তিনি সরকারের রেলপথ মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এর আগে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন নূরুল ইসলাম সুজন।

এনিয়ে মোট পাঁচবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০০১ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপির প্রার্থীর কাছে হেরে যান তিনি। পরে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় পান তিনি।

হাকিম পেশায় একজন ব্যবসায়ী। এছাড়া রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি

নাজমুল হাসান
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন নাজমুল হাসান। তিনি কিশোরগঞ্জ-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

২০০৯ সালে এই আসনের উপ-নির্বাচনে জয় লাভের পর প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। মি. হাসান বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এবং রাজনীতিবিদ আইভি রহমানের সন্তান।

সংসদ সদস্য ছাড়াও তিনি ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবেও নিযুক্ত রয়েছেন। এছাড়া তিনি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং শাইনপুকুর সিরামিক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

সামন্ত লাল সেন
সেন এবার টেকনোক্রেট মন্ত্রী হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। এর আগে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন জাহিদ মালেক।

মন্ত্রিসভায় পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর ডা. সামন্ত লাল সেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, মন্ত্রিসভায় ডাক পাওয়া তার জন্য একবারেই অপ্রত্যাশিত।

চিকিৎসক সামন্ত লাল সেনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত পরিচয় রয়েছে। অনেকে মনে করেন তিনি শেখ হাসিনার আস্থাভাজন।

এ বিষয়টি মন্ত্রী হবার ক্ষেত্রে কাজ করেছে কী না?

এমন প্রশ্নে সেন বলেন, “আমি ঠিক বলতে পারবো না।”

সেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে ১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে বার্ন ইউনিট চালু হলে তিনি এতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০০৩ সালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জন্য একটি আলাদা ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয় যার প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালক ছিলেন তিনি।

পরে তিনি অবসরগ্রহণ করলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে এই ইউনিটটিকে একটি আলাদা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট নামে ২০১৯ সালে চালু করা হয়।

প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই এর প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন মি. সেন। বলা হয়, এই ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসেন তিনি।

একই সাথে তিনি বাংলাদেশ প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। চিকিৎসায় সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে ২০১৮ সালে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়।

কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা
খাগড়াছড়ি আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এর আগে তিনি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া তিনি ২০১০ সাল থেকে পরবর্তী তিন বছর খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ত্রিপুরা বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত তিনি।

“আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম অনেক বছর। এটাও দপ্তর একটা। এছাড়া টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ছিলাম। এটা মন্ত্রণালয়ের চেয়ে কঠিন ছিল,” বিবিসি বাংলাকে বলেন মি. ত্রিপুরা।

২০১৮ সালে তাকে শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, যেহেতু আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন, নতুন দায়িত্বও যথাযথভাবে পালন করতে পারবেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কাজ করে এই জেলার চেহারা পাল্টে দিতে চান বলে জানান মি. ত্রিপুরা।

মহিববুর রহমান
পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দায়িত্ব পেয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। সেসময় তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।

এর আগে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন মি. রহমান। ছিলেন যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত
ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য হয়েছেন মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

এর আগে ২০২৩ সালের জুলাইতে এই আসনের সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফারুক মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য হয়। উপনির্বাচনে জয় পেয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হন তিনি।

গত কয়েক বছরে রাজনীতিতে তার উত্থান হয়েছে এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক গ্রুপের একজন প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে তিনি পরিচিত। তিনি ২০২২ সালে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন।

তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান উপদেষ্টা। একই সাথে তিনি সুচিন্তা ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থার চেয়ারম্যান।

সিমিন হোসেন রিমি
গাজীপুর-৪ আসন থেকে জয় পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সিমিন হোসেন রিমি। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব পেয়েছেন।

এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন তিনি।

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা তিনি। তার ছোট ভাই তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

‘৭৫ এর ১৫ই অগাস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তেসরা নভেম্বর তাজউদ্দীন আহমেদসহ জাতীয় চার নেতা কারাগারে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

সিমিনি হোসেন রিমির মা সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০১২ সালে গাজীপুর-৪ আসনের উপনির্বাচনে জয় লাভের মধ্য দিয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি পুনর্নির্বাচিত হন।

এর আগে ১৯৯৬ সালে এই আসনটিতে এমপি হয়েছিলেন তার চাচা আফসার উদ্দীন আহমদ খান।

২০২২ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয় সিমিন হোসেন রিমিকে।

শফিকুর রহমান চৌধুরী
সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। দায়িত্ব পেয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এর আগে ২০০৮ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

তিনি ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। পরে তিনি যুক্তরাজ্য চলে যান এবং সেখানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

বেগম রুমানা আলী
গাজীপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন বেগম রুমানা আলী।

এর আগে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।

রুমানা আলী সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রয়াত রাজনীতিবিদ রহমত আলীর কন্যা। গাজীপুর-৩ আসন থেকে বহুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তার বাবা।

এছাড়া শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন রহমত আলী।

পেশাগত জীবনে একজন শিক্ষক রুমানা আলী কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদকেরও দায়িত্ব রয়েছেন।

আহসানুল ইসলাম টিটো
তিনি টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি।

এর আগে তিনি ২০১৮ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিলেও পরাজিত হয়েছিলেন তিনি।

আহসানুল ইসলাম টিটো টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

ইসলাম আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য এবং ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মকবুল হোসেনের ছেলে। হোসেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক ছিলেন।

শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আহসানুল ইসলাম টিটো। এছাড়া তিনি একজন ব্যবসায়ী। একই সাথে তিনি একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।

এসএইচ-০২/১২/২৪ (অনলাইন ডেস্ক, বিবিসি)