বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রশ্ন রেখে বলেছেন, হাজি সেলিম, পঙ্কজ দেবনাথ সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারা আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন, তাহলে বিএনপির প্রার্থীরা কেন করতে পারবেন না?
মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে নিজের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নাটোর-২ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় রিটার্নিং কর্মকর্তা সেটি বাতিল করেছেন।
দুলু বলেন, হাজি সেলিম সাহেব ১৩ বছরের সাজা নিয়ে যদি নির্বাচন করতে পারেন, পঙ্কজ দেবনাথ আমার সঙ্গে দুদকের মামলায় প্রায় দুই-আড়াই বছর জেলে ছিলেন। দুদকের মামলায় তারও ১২ বছরের জেল আছে। পঙ্কজ দেবনাথ, হাজি সেলিম যদি নির্বাচন করতে পারেন তাহলে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ইকবাল হাসান টুকুসহ বিএনপি নেতারা কেন নির্বাচন করতে পারবেন না? পরিকল্পিতভাবে বিএনপির অনেকেরই মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
আপনার মনোনয়নপত্র কেন বাতিল করা হয়েছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমার নাকি মামলা আছে। আমি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। কিন্তু গত এক বছর আগে আমি এটা সাসপেনশন করিয়েছি এবং সাসপেনশন করলে নির্বাচন করতে কোনো সমস্যা থাকে না।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, সরকার আমাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগই দেয়নি। রিটার্নিং অফিসারের কাছে আমরা যখন কাগজ জমা দিতে গেছি, আমরা জানতে চেয়েছি, কী কারণে আমাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলো? তারা বললো, আপনারা আপিলে গিয়ে এই কথাগুলো বলুন।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন অবশ্যই তদন্ত করে দেখে আমাদের মনোনয়নপত্র বহাল রাখবেন। প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে এ কারণে আমাদের দল বিভিন্ন এলাকায় দু-তিনজন করে প্রার্থী দিয়েছে। ওই সময় নিশ্চয়ই আপনারা আশ্চর্য হয়েছিলেন। এর পেছনের কারণ ছিল এটা। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম, বিএনপির প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র অনুযায়ী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে ২ হাজার ২৭৯ জনের বৈধ এবং ৭৮৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তবে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে গতকাল সোমবার থেকে তারা নির্বাচন কমিশনে এসে আপিল করছেন। ইসি আবদনের ওপর শুনানি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে আপিল আবেদন জমা দেন প্রার্থীরা। সেখানে আপিল গ্রহণের জন্য আটটি বুথ রয়েছে।
প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা বুথ রাখা হয়েছে। প্রার্থী বা তার মনোনীত প্রতিনিধিরা কমিশন চত্বরের বুথে আপিল দায়ের করছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন। এটা করতে হবে আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে। কমিশন প্রার্থীদের অভিযোগ আমলে নিয়ে ৬, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর শুনানি করে সিদ্ধান্ত দেবেন। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনই আপিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা পালন করবেন।
বিএ-০৩/০৪-১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)