‘নির্বাচনে জনগণের ঢল নামুক, ভোট কেন্দ্র হোক ভোটারের’ এমন স্লোগান দিয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন দেশের ২৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তাদের মধ্যে সম্প্রতি কারামুক্ত বিশ্বখ্যাত আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলমও রয়েছেন। সম্মেলনে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তা কাটাতে পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়।
আলোকচিত্রী শহীদুল আলম ছাড়া অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, ব্যারিস্টার সারা হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
শহীদুল আলম বলেন, রিপোর্টার-ফটো সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এখন অনেক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সরকারের যদি ভয় না থাকে তাহলে এই নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন কী?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, নির্বাচনের আগে আমরা দেখছি, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সরকারকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। তিনি বলেন, জনগণের অধিকার অর্জন না হলে দেশে রাজতন্ত্র কায়েম হবে। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, আমাদের ভূমিকা মসজিদের মুয়াজ্জিনের মতো। মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব আজান দেয়া, কিন্তু আজান শুনে মানুষ যদি নামাজ পড়তে না আসে সেক্ষেত্রে তার কিছু করার নাই।
অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, মানুষের মধ্যে যখন অনিশ্চয়তা তৈরি হবে, উদ্বেগ তৈরি হবে তখন কিন্তু গুজব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এই গুজব যাতে তৈরি না হয় সেজন্য ভোট কেন্দ্রগুলোতে কি হচ্ছে ভোট প্রদান কিভাবে হচ্ছে এ সমস্ত খবর নিশ্চিত করবে গণমাধ্যম।
ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, আমরা দেখছি, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলীয়রা প্রচারণায় নেমে হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। অন্যদিকে, সরকারদলীয়রা রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, একথা সত্য যে, একটানা একদলের শাসনের অধীনে থাকতে থাকতে, দমন পীড়ন ও ভয়ের রাজত্বে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে জনমানুষের আশাবাদের জায়গাটা ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়েছে। সরকার মুখে যা-ই বলুক না কেন জনগণের একটা বড় অংশের মধ্যে এই অবিশ্বাস খুঁটি গেঁড়ে বসেছে যে নির্বাচনটি সরকারের সাজানো ছক অনুযায়ী-ই হবে।
এসএইচ-২৪/২৩/১৮ (ন্যাশনাল ডেস্ক)