বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংসদে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত বিএনপির তা বহাল আছে। এ বিষয়ে আর কোনো দ্বিমত থাকার কথা নয়। দলের সিদ্ধান্ত যারা ভাঙবেন, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিএনপির নির্বাচিতরা যেন শপথ নেন, সে জন্য সরকারের চাপ আছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
শুক্রবার ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জাহিদুর রহমান শপথ নিয়েছেন দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে। এটা তিনি অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছেন, অন্যায়, অপরাধ করেছেন। এ জন্য তার বিরুদ্ধে সংগঠন ব্যবস্থা নেবে। যেটাকে আমরা বলি সাংগঠনিক ব্যবস্থা, সেটা অবশ্যই নেয়া হবে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল -এটা জনগণের দল। একজন ব্যক্তি বা একটা গোষ্ঠীর যদি কেউ কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাতে দলের বড় কোনো ক্ষতি হয় না। এই ধরনের ঘটনায় দলে কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। এই ধরনের ঘটনা অতীতেও ঘটেছে এবং এতে আমরা খুব বেশি উদ্বিগ্ন নই।
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে একজন সদস্য শপথগ্রহণ করলে তার সংসদ সদস্যপদের বৈধতা নিয়ে বিএনপি কি স্পিকার অথবা নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দেবে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আমাদের যে আগামী স্থায়ী কমিটির সভা আছে, সেই সভাতে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাহিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের সিদ্ধান্ত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। আমি তো একা সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক নই। যখন সিদ্ধান্ত হবে আপনারা তা জানতে পারবেন।
দলের সিদ্ধান্ত নির্বাচিতরা মানছেন না, আরও অনেকে শপথ নিতে আগ্রহী, সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল ইসলাম বলেন, একজন গেছেন। বাকি যারা আছেন, যারা নির্বাচিত, তাদের সিদ্ধান্ত তো আমরা এখনো জানি না। তারা আমাদের জানাননি এখনো। আমাদের দলের সিদ্ধান্ত যেটা ছিল, সেটাই বহাল আছে। আমরা শপথ গ্রহণ করবে না, এই বিষয়ে আর কোনো দ্বিমত থাকার কথা নয়।
সরকার বিএনপি ভাঙার চেষ্টা করছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা তো স্বাভাবিক। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটি অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। বাংলাদেশে বরাবরই এই ধরনের দল ভাঙার প্রচেষ্টা হয়েছে, ভেঙেছে। কিন্তু বিএনপির বিরুদ্ধে এই ধরনের প্রচেষ্টা করে কখনো কোনো লাভ হয়নি। বিএনপি সব সময়ই ফিরে এসে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে এবং স্বমহিমায় জনগণের কাছে গেছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, শপথ নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের দিক থেকে নিঃসন্দেহে চাপ রয়েছে। যেটা সব সময়ই থাকে। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় না, তারাই এই ধরনের চেষ্টা করে থাকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল, একটি গোষ্ঠী বা একটি ব্যক্তি যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে দলের খুব বেশি ক্ষতি হয় না।
খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে বড় কোনো কর্মসূচি নেবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা দেশনেত্রীর মুক্তির ব্যাপারে আন্দোলনে সংগ্রামে আছি। এটাকে ধীরে ধীরে জনগণের দাবিতে পরিণত হচ্ছে এবং হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেত্রী জেবা খান, হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আখতারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
বিএ-১২/২৬-০৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক)