পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানিয়েছেন, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার তদন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। কিছু কাগজপত্র তৈরি করে চলতি মাসের যেকোনও দিন ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেওয়া হবে।
শনিবার দুপুরে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
বনজ কুমার মজুমদার বলেন, নুসরাত হত্যার ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে করা আইসিটি মামলার তদন্ত শেষ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। আদালতে তারা সময়ের আবেদন করেছেন। ওসি ও এসআইয়ের মোবাইল দু’টি জব্দ করেছে তদন্ত দল। আদালতের কাছে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের সুপারিশ করবে তারা।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে রাফি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান।
সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচ ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে নুসরাতের শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকালে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে।
আলোচিত এ মামলা এ পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে মামলার আসামিরা। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে।
বিএ-১০/০৪-০৫ (ন্যাশনাল ডেস্ক)