কিছুই বলছেন না সৌরভ

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের নিখোঁজ ভাগ্নে সৈয়দ ইফতেখার আলম ওরফে সৌরভের শারীরিক অবস্থা ভালো এবং তিনি সুস্থ আছেন। তবে তাকে ১১ দিন কোথায় আটকে রাখা হয়েছিল, নির্যাতন করা হয়েছে কিনা, কার জিম্মায় ছিলেন- এ ব্যাপারে কিছুতেই মুখ খুলছেন না সৌরভ। কারো কাছেই কোনো জবাব নেই।

এদিকে অতীতে নিখোঁজের পর ফিরে আসা বহু পরিবারের মতোই সৌরভের স্বজনরাও চুপ। এ বিষয়ে প্রশ্ন না করতেই অনুরোধ এলো বাবার কাছ থেকে। সন্তান ফিরে এসেছে, এটাই বড় তার কাছে।

পরিবারের অভিযোগ, গত ৯ জুন সৌরভকে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আফমি প্লাজার সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুইজন লোক। পরের দিন সৌরভের বাবা সৈয়দ ইদ্রিস আলম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ফেসবুক লাইভে এসে দফায় দফায় কথা বলে সোহেল তাজ বিষয়টি ভাইরাল করে তুলেছেন।

এর মধ্যে ১১ দিন পর বৃহস্পতিবার সৌরভকে পাওয়া যায় ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় পাওয়া যায়। তাকে একটি গাড়িতে করে নামিয়ে দেওয়া হয় রাস্তার ধারে। এ সময় তার হাত পা বাঁধা ছিল। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে এবং পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সৌরভকে কারা নিয়ে গিয়েছিল, কেন নিয়ে গিয়েছিল, কোথায় ছিলেন তিনি- এসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি কারো কাছেই।

সৌরভের বাবা সৈয়দ ইদ্রিস আলম ছেলেকে ফিরে পাওয়ার পরদিন শুক্রবার দুপুরে বলেন, কারা তাকে নিয়ে গিয়েছিল সেগুলো নিয়ে এখন আমরা কিছু ভাবছি না। আমার ছেলে এখন খুব ডিপ্রেশনের মধ্যে আছে। যেটা বলে বোঝাতে পারব না। তাকে আগে সুস্থ করি, পরে বাকি কথা হবে।

ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধারের পর পুলিশ কোন বিষয় জানতে পেরেছে কি-না জানতে চাওয়া হয় সুপার শাহ মো. আবিদ হোসেনের কাছে। প্রশ্ন শুনে কিছুটা রাগান্বিত হয়ে তিনি বলেন, ওইটার ইয়ে (অগ্রগতি) নেই….। আর এটা তো আপডেটের বিষয়ে জানলেও আপনাকে জানানোর প্রসঙ্গ আসছে না, ঠিক আছে? হ্যাঁ হ্যাঁ…।

তদন্ত করছেন কিনা এটা জানতে চাচ্ছি তখন পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা আমাদের…. হ্যাঁ হ্যাঁ, ওকে।’

সোহেল তাজ ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, তার ভাগ্নেকে যখন পাওয়া যায় তখন তার হাত-পা বাঁধা ছিল। গায়ে কোনো জামা ছিল না, শুধু পায়জামা পরা ছিল। তার চোখ বাঁধা ছিল। ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার তাকে বাসায় নিয়ে গোসলের ব্যবস্থা করেন এবং কিছু খাবার দেন। উদ্ধারের পর সৌরভ বুঝেই উঠতে পারেনি সে কোথায় আছে।

সোহেল তাজ ফেসবুকেই সৌরভের অন্তর্ধানের বিষয়টিও জানান। তিনি লেখেন, আমার মামাতো বোনের ছেলে (ভাগিনা), সৈয়দ ইফতেখার আলম প্রকাশ (সৌরভ)- কে গত ৯ জুন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হসপিটালের সামনে থেকে অপহরণ করা হয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের অনুরোধ করছি সৌরভকে ফিরিয়ে দিতে তার পরিবারের কাছে। অন্যথায় আপনাদের পরিচয় জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। ঘটনার আড়ালে কারা আছেন, তা আমরা জানি।

ভাগ্নেকে অক্ষত ও জীবিত অবস্থায় ফেরত চেয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলন করেন তাজ। এ সময় তার নিখোঁজ ভাগ্নের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেক্ষ যে, সওদা নামের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গণমাধ্যমে প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামে এক ধনকুবেরের মেয়ের সঙ্গে সৌরভের প্রেম ছিল। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই অপহরণ হয়েছে বলে কথা উঠেছে। তবে পুলিশ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

এসএইচ-৩৪/২২/১৯ (ন্যাশনাল ডেস্ক)