সুন্দরবন বাঁচিয়ে দিল বাংলাদেশকে, বুলবুলের আঘাতে নিহত ৪

অতি প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুল’ বঙ্গোপসাগর দিয়ে মূলত বাংলাদেশের স্থলভাগে প্রবেশ করেছে। প্রবেশের সময় ঘূর্ণিঝড়ের একপাশে ছিল পশ্চিমবঙ্গ, আর সুন্দরবন ছিল তিন পাশে। সুন্দরবন অতিক্রম করতে ঘূর্ণিঝড়ের দীর্ঘসময় লাগে ও গতি কমে আসে। ফলে পূর্ণ শক্তি নিয়ে বুলবুল বাংলাদেশের স্থলভাগে আঘাত করতে পারেনি। তবে বুলবুলের আঘাতে নিহত হয়েছেন ৪ জন।

রোববার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আবহাওয়া অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান।

তিনি বলেন, ‘এটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে নাই। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের একপাশে পশ্চিমবঙ্গ ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের তিনদিক জুড়েই ছিল সুন্দরবন।’

বুলবুলের গতি কমার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বুলবুল যে গতিতে আসার কথা ছিল, সেই গতিতে আসেনি। যখন ঘূর্ণিঝড় জলভাগের ওপর দিয়ে চলে, সেই জলভাগ ঘূর্ণিঝড়ের ওপর তেমন শক্তি প্রয়োগ করতে পারে না। কিন্তু স্থলভাগে গাছ, স্থাপনা দাঁড়ানো থাকে। এগুলোর সঙ্গে সবসময় সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ঘূর্ণিঝড়, বাধা প্রাপ্ত হয়; এ কারণে ওর মধ্যে রিটার্নিং ফোর্সের (বিরোধী শক্তি) কারণে গতি আস্তে আস্তে কমে যায়।’

তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের তিন দিকেই সুন্দরবন জুড়ে ছিল। যেহেতু ঘূর্ণিঝড় উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল, সুন্দরবনের কারণে তার অবস্থানের পরিবর্তন কমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিজস্ব শক্তিও কমে আসে। এ কারণে উপকূল অতিক্রম করতে গিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের দীর্ঘক্ষণ সময় লেগেছে।’

বরিশাল অংশ দিয়ে বুলবুল প্রবেশ করলে এর গতি ১১৫ থেকে ১২০ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি গতিতে দ্রুত স্থলভাগে প্রবেশ করত বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুলের’ আঘাতে খুলনায় ২, সাতক্ষীরা ও পটুয়াখালিতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাৎক্ষনিকভাবে নিহতের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

তবে ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিনত হয়েছে। এ কারণে মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রামে মহাবিপদ সংকেত প্রত্যাহার করা হয়েছে।

উপকূলীয় এলাকায় মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত এবং নৌযান চলাচলে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

রোববার সকালে দিকে আবহাওয়া দপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দীন আহমেদ এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

এর আগে আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটির অবস্থান ক্রমান্বয়ে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে আজ রোববার সন্ধ্যা নাগাদ বুলবুলের প্রভাবমুক্ত হবে বাংলাদেশ।

এসএইচ-০২/১০/১৯ (ন্যাশনাল ডেস্ক)