চাল চুরির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সব উপজেলার টিসিএফ বরখাস্ত হবে: খাদ্যমন্ত্রী

দেশের যে সব উপজেলায় ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল চুরির ঘটনা ঘটেছে ওই সব এলাকার উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (টিসিএফ) সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

পাশাপাশি ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও ভিজিডির চাল আত্মসাৎকারী ডিলারদের জামানত বাজেয়াপ্ত ও ডিলারশিপ বাতিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সোমবার রাতে বলেন, ‘যেসব এলাকায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল চুরি বা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। সেনব এলাকার উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে সাসপেন্ড করার জন্য খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে(ডিজি) বলা হয়েছে। কারণ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক পদাধিকার বলে এ সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব।

কাজেই তাকে ওই পদে রেখে তদন্ত করা হলে সেটা আসল ক্রিমিনাল ধরা পড়বে না। এ জন্য এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া চাল আত্মসাৎকারী ডিলারের ডিলারশীপ বাতিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদফতরের ডিজি সারোয়ার মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি। শুধু টিসিএফ নয়, খাদ্য বিভাগের যারই জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যাবে তাকেই সাসপেন্ড করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। এমনকি যেসব ডিলার এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেও ডিলারশিপও বাতিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

ওদিকে রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে চাল আত্মসাৎকারী ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারদের ডিলাশীপ বাতিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, ইদানিং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন জেলার পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে বিশেষ ওএমএস (চাল/আটা), খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও ভিজিডি’র চাল বিভিন্ন ডিলার, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও গোডাউনসহ তাদের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা আত্মসাৎ করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যে এ বিষয়গুলো নজরে এনে স্থানীয় প্রশাসন আইন-শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় আত্মসাৎকৃত চাল জব্দ করে মামলা করছে। বিষয়টি মন্ত্রণালয়সহ সর্বমহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত কিংবা পরিকল্পিত চাল আত্মসাতের ঘটনা নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই ডিলারের জামানত বাজেয়াপ্ত এবং ডিলারশিপ বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

এতে আরও বলা হয়, প্রয়োজনে কোনো এলাকার সব ডিলারশিপ বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া কিংবা জেলা প্রশাসকরা তাদের বিবেচনায় দণ্ড, যোগ্য ও সৎ কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের ডিলার হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন।

এ বিষয় অন্য কোনো নির্দেশনা প্রয়োজন হলে খাদ্য সচিবের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য অনুরোধও জানানো হয়েছে চিঠিতে।

বিএ-০৮/১৩-০৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক, তথ্যসূত্র: যুগান্তর)