টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে?

দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণহারে টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছে। শুরুতে নানা ধরনের আশঙ্কার কারণে অনেকেই টিকা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু তারপর দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। প্রথমদিনে টিকা গ্রহণের সংখ্যাটা কিছুটা কম থাকলেও দিন যেতে যেতে প্রতিদিনই তা বেড়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড যৌথভাবে বিশ্বজুড়ে এক জরিপ পরিচালনা করেছে। যেখানে দেখা গেছে বাংলাদেশে ৬৪ শতাংশের মতো মানুষ করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে আগ্রহী।

জানুয়ারির শেষের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউট একটি জরিপের রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে দেখা গিয়েছিল যে ৩২ শতাংশের মত মানুষে করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে আগ্রহী।

শুরুতে টিকা নেওয়ার আগ্রহ কম থাকলেও পরে কেন এই আগ্রহ বাড়ল সেটার কারণ খুঁজে বের করে মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদনে কয়েকটি বিষয়ে সামনে নিয়ে এসেছে। সেগুলো হলো-

১। টিকা নেওয়ার পর তেমন মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি।

২। সরকার এখন সবার জন্য টিকা বিনামূল্যে দিচ্ছে, কিন্তু একটা সময় এটি বিনামূল্যে নাও দিতে পারে।

৩। প্রতিদিনই টিকার নেওয়ার সংখ্যা বাড়ছে, এতে অনেকেই আগ্রহ হয়ে টিকা গ্রহণ করছে।

৪। টিকা কর্মসূচী শুরু হওয়ার পর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছেন। এতে অনেকেই আগ্রহ নিয়ে টিকা গ্রহণ করছেন।

৫। বাইরে কোথাও ভ্রমণ করতে হলে করোনা টিকার সনদ দেখাতে হতে পারে, এ কারণে অনেকেই টিকা গ্রহণ করছেন।

এদিকে সোমবার দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ করোনার টিকা গ্রহণ করে। এদিন মোট দুই লাখ ২৬ হাজার ৬৭৮ জনকে করোনাভাইরাসের টিকা প্রদান করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক টিকাগ্রহণের রেকর্ড।

সোমবার টিকাগ্রহণকারীর মধ্যে পুরুষ রয়েছেন এক লাখ ৪৭ হাজার ১৫৫ জন এবং নারী ৭৯ হাজার ৫২৩ জন। এ সময়ে ২৯ জন বিরূপ প্রতিক্রিয়ার উপসর্গ বা অ্যাডভার্স ইভেন্ট ফলোইং ইমিউনাইজেশন (এইএফআই) রিপোর্ট করেছেন।

সোমবার পর্যন্ত দেশব্যাপী চলমান গণটিকাদান কার্যক্রমে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ১১ লাখ ৩২ হাজার ৭১১ জনে দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে পুরুষ সাত লাখ ৭৩ হাজার ৬২৪ জন ও তিন লাখ ৫৯ হাজার ৮৭ জন নারী। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে রোববার পর্যন্ত এইএফআই রিপোর্ট করেছেন ৪৫৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় টিকাগ্রহণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৬২ হাজার ৭৩৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে নয় হাজার ৪৫৫, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫২ হাজার ৭৪৪, রাজশাহী বিভাগে ২৪ হাজার ৬০জন, রংপুর বিভাগে ২১ হাজার ৬১৮ জন, খুলনা বিভাগে ২৭ হাজার ৭১০ জন, বরিশাল বিভাগে ১২ হাজার ১৩১ এবং সিলেট বিভাগে ১৬ হাজার ২২৭ জন টিকা নিয়েছেন।

বিভাগীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট টিকাগ্রহণকারী ১১ লাখ ৩২ হাজার ৭১১ জনের মধ্যে- ঢাকায় তিন লাখ দুই হাজার ৭০৫ জন, ময়মনসিংহে ৫০ হাজার ৭৩০, চট্টগ্রামে দুই লাখ ৭০ হাজার ৯৫৯, রাজশাহীতে এক লাখ ২৮হাজার ৭৬৩, রংপুরে এক লাখ ছয় হাজার ৬৩৪, খুলনায় এক লাখ ২৮ হাজার ১৫৯ জন, বরিশালে ৫১ হাজার ৫২৩ এবং সিলেট বিভাগে ৯৩ হাজার ২৩৮ জন টিকা নেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছর ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরদিন ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর সরকারি পাঁচটি হাসপাতাল এবং পরে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।

এসএইচ-০৩/১৬/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)