অধ্যক্ষকে ৬ টুকরা করে কলেজ প্রাঙ্গণেই পুঁতে ফেলা হয় লাশ

সাভারের রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মিন্টু চন্দ্র বর্মণকে (৩৬) হত্যার পর লাশ টুকরা টুকরা করে কলেজের মাঠে পুঁতে ফেলা হয়। স্কুলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তাকে খুন করা হয়।

সোমবার দুপুরে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে মাটি খুঁড়ে মিন্টু বর্মণের খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে র‍্যাব। এ সময় অধ্যক্ষের এক সহকর্মীসহ আটক তিনজন র‌্যাবের সঙ্গে ছিলেন।

মিন্টু লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামের শরত বর্মনের ছেলে। তার পরিবার গ্রামে থাকে।

র‍্যাব জানায়, মিন্টু চন্দ্র বর্মণ সাত বছর ধরে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সেখানকার আমিন মডেল টাউন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করতেন। বছর দুই আগে মিন্টু চন্দ্র বর্মণসহ চারজন মিলে জামগড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

অন্য তিন সহপ্রতিষ্ঠাতা হলেন- রবিউল ইসলাম, মোতালেব ও শামসুজ্জামান। মিন্টু চন্দ্র বর্মণ ছিলেন এর অধ্যক্ষ। সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃত্ব ও মালিকানা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। গত ১৩ জুলাই থেকে হঠাৎ মিন্টুর খোঁজ মিলছিল না। পরে সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে গত ২২ জুলাই সন্ধান চেয়ে আশুলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন মিন্টুর ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মন।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ছায়া তদন্ত করে র‌্যাব। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব আটক করে গণিতের শিক্ষক রবিউল ইসলাম, তার ভাগনে বাদশা ও ইংরেজির শিক্ষক মোতালেবকে।

তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ওই শিক্ষককে ১০৬ নম্বর কক্ষে মেরে প্রথমে লাশ ছয় টুকরো করা হয়। পরিকল্পনা করা হয় ঘরের মেঝে খুঁড়ে লাশ পুঁতে ফেলার। তবে পাকা মেঝের কারণে তা না করে মিন্টুকে টুকরা টুকরা করে দুটি পা ও বুক থেকে নাভি পর্যন্ত অংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পুঁতে ফেলা হয়। মিন্টুর মাথা দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায় একটি ডোবায় ফেলা দেওয়া হয়।

র‍্যাব-৪ সিপিসি-২’র লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, ‘নিখোঁজের ঘটনাটি র‍্যাব উদঘাটন করেছে। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আটক ব্যক্তিদের ভাষ্যমতে স্কুলের শ্রেণিকক্ষেই মিন্টু বর্মণকে কুপিয়ে খুন করা হয়। লাশ ছয় টুকরা করে স্কুলের মাঠেই পুঁতে ফেলা হয়। এরপর বিচ্ছিন্ন মাথা ফেলা হয় দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায়। আটক সবাই খুনের সঙ্গে জড়িত।

এসএইচ-১৪/০৯/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)