দোকান-শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল বুধবার থেকে সারা দেশে খুলছে শপিংমল-দোকানপাট।

মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন।

হেলাল উদ্দিন বলেন, নিজেদের স্বার্থেই সবার উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। ক্রেতারা যেন কোনোভাবেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে মার্কেট কর্তৃপক্ষ ও দোকান মালিকদের অনুরোধ করেছেন তিনি।

এ ছাড়া এই দীর্ঘ সময়ে দোকান বন্ধ রাখায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কি পরিমাণ পণ্য নষ্ট হয়েছে ও কি পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করে মালিক সমিতিকে জানালে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর তুলে ধরা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

একই সময়ে বিপণিবিতানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানা হচ্ছে কি না, তা তদারকি করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। এ ব্যাপারে তাদের সার্বিক সহায়তা করার আহ্বান জানিয়ে মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, অনিয়ম ও উদাসীনতা পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পদক্ষেপ নেবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি করেন।

গত রোববার বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয় বুধবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারা দেশে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা যাবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিধিনিষেধের অনুবৃত্তিক্রমে কিছু শর্ত সংযুক্ত করে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো।

শর্তগুলো হলো-
১. সকল সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক খোলা থাকবে।
২. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৩. সড়ক, রেল ও নৌপথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন/যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
৪. শপিংমল/মার্কেট/দোকানপাটসমূহ সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক খোলা রাখা যাবে।
৫. সকল প্রকার শিল্প-কলকারখানা চালু থাকবে।
৬. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
৭. সকল ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৮. গণপরিবহন, বিভিন্ন দপ্তর, মার্কেট ও বাজারসহ যে কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১ জুলাই থেকে বিধিনিষেধ শুরু হয়। পরে তা কয়েক দফায় বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এসএইচ-০৩/১০/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)