জুলহাস-তনয় হত্যায় ৬ ‘জঙ্গির’ মৃত্যুদণ্ড

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলার ছয় ‘জঙ্গির’ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

গত ২৩ আগস্ট জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তনয় হত্যা মামলার রায় ৩১ আগস্ট ঘোষণার কথা জানান আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ আদেশ দেন। ওইদিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম সারোয়ার খান।

উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য এদিন তারিখ ঠিক করেন বলেও জানান তিনি।

মামলায় আসামিদের মধ্যে মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সায়মন, মো. আরাফাত রহমান, মো. শেখ আবদুল্লাহ জোবায়ের ও আসাদুল্লাহকে ওইদিন কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এ ছাড়া পলাতক রয়েছেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও মো. জুনাইদ আহমদ।

এ মামলায় চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল জিয়াসহ ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিদের মধ্যে গ্রেপ্তার চার জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পলাতক রয়েছেন জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত জিয়াসহ চার জন।

২০১৯ সালের ১৩ মে জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় কলাবাগানের বাসায় ঢুকে জুলহাস মান্নান (৩৫) ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। জুলহাস ও মাহবুবকে হত্যা করে পালানোর সময় বাধা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লাকেও কুপিয়ে আহত করে।

পালানোর সময় রাস্তায় এক হামলাকারীকে জাপটে ধরেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মমতাজউদ্দিন। তাকেও কুপিয়ে পালিয়ে যায় ওই সন্ত্রাসী। তবে এএসআই মমতাজ হামলাকারীদের একজনের কাছ থেকে একটি ব্যাগ রেখে দিতে সক্ষম হন। ওই ব্যাগে একটি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মুঠোফোন পাওয়া যায়।

জুলহাস সমকামীদের অধিকারবিষয়ক সাময়িকী রূপবান সম্পাদনা ও প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নাট্যকর্মী মাহবুব পিটিএ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ‘শিশু নাট্য প্রশিক্ষক’ হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে কলাবাগান থানায় করা দুই মামলা তদন্ত করে সিটিটিসি। আনসার আল ইসলামের চার জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। সংগঠনটি নিজেদের আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা বলে দাবি করে।

এসএইচ-০৭/৩১/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)