অস্ট্রেলিয়ায় বসে যেভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন রোজী

সপরিবারে অস্ট্রেলিয়ার নেওয়ার কথা বলে এক আইনজীবীর কাছ থেকে ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসী উম্মে ফাতেমা রোজী।

এ ঘটনায় প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। চক্রের মূলহোতা ওই নারীকে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনানুগ ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে সিআইডি।

রোববার দুপুরে মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, উম্মে ফাতেমা রোজী নামে এক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীর কাছে ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম (৪৭)।

এরপর খিলগাঁও থানায় তিনি রোজীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে রোজীর সহযোগী চক্রের দুজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তার দুজন হলেন- মো. সাইমুন ইসলাম (২৬) ও আশফাকুজ্জামান খন্দকার (২৬)।

ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়ান রিলেটিভ স্পনসর মাইগ্রেশন (৮৫৫) পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট জাল ভিসা প্রস্তুত করে বাংলাদেশিদের অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন রোজী। তিনি মাঝে মধ্যে দেশে এসে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করেন। দেশের উচ্চবিত্তদের টার্গেট করে আত্মীয় ভিসায় অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখান।

রোজী অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশন কনস্যুলার জেনারেল হিসেবে ভুয়া পরিচয় দেন। এ ছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের কাছ থেকে নেওয়া পুরস্কারের ছবি মানুষকে দেখাতেন। ফলে অস্ট্রেলিয়া যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা তাকে বিশ্বাস করেন। এভাবে ধাপে ধাপে কাগজপত্র ও ভিসার কথা বলে টাকা নিতেন তিনি। একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে এভাবে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, এমন ফাঁদে পড়ে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের আট সদস্যদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যেতে চেয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম। এরপর দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা রোজীর অ্যাকাউন্টে দেন।

এরপর কাগজপত্র ও ভিসা হাতে পেয়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে দেখতে পান সব ভুয়া ও জাল। এভাবে প্রতারণা করে রোজী একাধিক মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুজন তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের লোগোসহ ভিসা সংক্রান্ত সকল প্রকার কাগজপত্র রোজীর কাছে পাঠাতেন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে জাল ভিসা প্রস্তুত কাজে ব্যবহৃত একটি কম্পিউটার, সাতটি অস্ট্রেলিয়ার জাল ভিসা গ্রান্ট নোটিশ, ফ্রি চিকিৎসার জন্য পাঁচটি কার্ড ও বিমানের ছয়টি টিকিট জব্দ করা হয়।

এসএইচ-২১/১২/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)