সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শ্যামাপূজায় দীপাবলী বর্জন

শারদীয় দুর্গাপূজায় হামলা ও ভাঙচুর এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে আগামী ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় শ্যামাপূজায় দীপাবলির উৎসব বর্জনসহ চার দফা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। তবে উৎসব বর্জন করলেও পূজা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি।

তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় পূজা না করার যে সিদ্ধান্তের কথা ছড়িয়েছে তা ঠিক নয়, আমরা পূজা করবো, সবাই পূজা করবে।’

শুক্রবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এ বিষয়ে জানাতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শ্যামা পূজায় একাধিক দিনের অনুষ্ঠান পরিহার করা হবে। পাশাপাশি সেদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১৫ মিনিট কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে দর্শনার্থী ও ভক্তরা স্ব-স্ব মন্দিরে নীরবতা পালন করবে।

এদিকে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় দেশের রাজনৈতিকদের দলগুলোর পাল্টাপাল্টি দোষারোপের সংস্কৃতি পরিস্থিতি আরও নাজুক করে তুলছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটা‌র্জি বলছেন, ‘কোনো একটি ঘটনা ঘটলে রাজনৈতিক দলসমূহের পারস্পরিক দোষারোপ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে প্রধান হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক দলসমূহের পারস্পরিক দোষারোপের কারণে প্রকৃত দোষীরাও পার পেয়ে যাচ্ছে।’

লিখিত বক্তব্যে নির্মল চ্যাটা‌র্জি জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে যত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার একটিরও ‘সুষ্ঠু বিচার’ হয়েছে বলে তাদের জানা নেই। এসময় সহিংসতার কয়েকটি বিষয় তুলে ধরে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি।

বলেন, ‘কুমিল্লা নানুয়া দীঘিরপাড়ের মণ্ডপটি অস্থায়ী। ঘটনার রাতে মণ্ডপে মাত্র একজন পাহারায় ছিল। রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।’

নির্মল চ্যাটার্জি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কী কারণে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, সেই বিষয়গুলো তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে কি? থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হনুমান মূর্তির কোলের ওপর রাখা পবিত্র কোরআন শরিফটি সরিয়ে নেওয়ার পর কেন ভিডিও করার সুযোগ করে দিলেন এবং কেন সে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।’

এমনকি চৌমুহনীতে বেলা ১১টার মধ্যে সব পূজা মণ্ডপে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হওয়ার পরও যখন হামলা শুরু হয়, তখন পুলিশ ও প্রশাসনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি বলে জানান নির্মল চ্যাটার্জি।

এসময় কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা ও হামলা পরবর্তী সময়ে স্থানীয় প্রশাসন সময়োযোগী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এসএইচ-২৩/২২/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)