কুচকাওয়াজে ভেসে উঠল বাংলাদেশের দুরন্ত ও অদম্য রূপ

জাঁকজমকপূর্ণ কুচকাওয়াজে উদযাপন করা হলো বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। এ কুচকাওয়াজে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের দুরন্ত ও অদম্য রূপ।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। বণার্ঢ্য এ আয়োজন উপভোগ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

উদ্যত খড়গের ভয় উপেক্ষা করে, শানি অস্ত্রে শত্রুকে রুখে দিয়ে শষ্যের ভাগ বুঝে নেওয়ার প্রেরণা যিনি। যিনি বুকে বিশ্বাস ও চোখে স্বপ্নের জনক সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর‌্যাল ছিল কুচকাওয়াজের পুরোভাগে। তারপরই সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের প্রতিকৃতি আর মুক্তিযোদ্ধাদের সুসজ্জিত বাহন। বিজয় দিবস কুচকাওয়াজে প্যারেড কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দেন ৯ম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক।

এতে দেশের বিভিন্ন বাহিনীর ২৩টি কন্টিনজেন্ট অংশ নেয়। অংশ নেয় বন্ধুপ্রতিম ৩টি রাষ্ট্রের কন্টিনজেন্ট এবং ২টি রাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক দল। বাংলাদেশকে সবার আগে স্বীকৃতি দেওয়া ভুটানের ৩৫ সদস্যের কন্টিনজেন্ট কুচকাওয়াজেও বিদেশি কন্টিনজেন্টের মধ্যে প্রথম রাষ্ট্রপতিকে সালাম জানায়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্বরাজনীতির মঞ্চে চলছিল ঠান্ডা লড়াই। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পক্ষে দাঁড়ায় রাশিয়া ও ভারত। সবচেয়ে বেশি ১২২ সদস্যের ভারতীয় কন্টিনজেন্টের বাদক দলের বাজনা প্যারেড স্কয়ারে ছড়িয়ে দেয় চিরকালীন বন্ধুত্বের সুর।

রাশিয়ান কন্টিনজেন্টের ভিন্ন রকমের নজর কাড়া কুচকাওয়াজ যেন বলে যায় সুখে দুখে পাশে আছি বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধ থামিয়ে দিতে বঙ্গপোসাগরে রণতরী পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের ৩ সদস্যের পর্যবেক্ষক দলের অংশ যেন জানান দিলো বাংলাদেশের কূটনৈতিক মানচিত্র কতটা বিস্তৃত। পর্যবেক্ষক হিসেবে রাষ্ট্রপতিকে সালাম জানানো আরেকটি দেশ হলো মেক্সিকো।

বাংলার মাটি কতটা দূর্জয় তা শত্রু আর দুর্বৃত্তদের বুঝিয়ে দিতে তুলে ধরা হয় সশস্ত্র তিন বাহিনীর বহুমাত্রিক সক্ষমতা। বিমানবাহিনীর মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট ও অ্যারোবেটিক ডিসপ্লের মাধ্যমে বাংলার নীলাকাশ কতটা সুরক্ষিত তা জানিয়ে দেওয়া হয়। মিগ টুয়েন্টি ওয়ানসহ বিভিন্ন যুদ্ধ বিমান আর সমরাস্ত্রের প্রদর্শনীর মাধ্যমে জানানো হয় যুগের সঙ্গে তালমিলিয়ে বাড়ছে দেশের সমর সক্ষমতা।

সুসজ্জিত গাড়ি বহর তুলে ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ও অর্জন।

আর্মি অ্যাভিয়েশন ও র‌্যাবের ফ্লাইরাষ্ট , দুঃসাহসিক প্যারা কমান্ডো সদস্যদের ফ্রিফল জাম্প কুজকাওয়াজকে দেয় ভিন্ন মাত্রা। সব মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আর সুবর্ণজয়ন্তীর প্যারেড উপস্থাপন করে দুরন্ত ও অদম্য বাংলাদেশের বর্ণিল চিত্র।

এসএইচ-০৩/১৬/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)