ওমিক্রনে পুরুষের চেয়ে নারীর সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি!

দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের যেসব জায়গায় করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ছে সেখানকার চিত্র ও গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। রোববার দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে সংস্থাটির মুখপাত্র অধ্যাপক মো. রোবেদ আমিন এ তথ্য জানিয়েছেন।

গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, আমাদের যে ভ্যাকসিনগুলো দেওয়া হচ্ছে সেটা কোনোটাই ওমিক্রন প্রতিরোধে শতভাগ কার্যকর না। যারা আগে দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের অ্যান্টিবডির মাত্রা ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।

ক্ষেত্র বিশেষে ওমিক্রম কার্যকর থাকতে পারে। বলা হচ্ছে, যারা কোভিড-১৯ এর দুটি ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা যেন বুস্টার ডোজ নেন। কারণ বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরও দেখা যাচ্ছে অ্যান্টিবডির মাত্রা অনেক বেড়ে যায় যা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রোবেদ আমিন বলেন, শুধু ভ্যাকসিন সুরক্ষা দিতে পারবে তা নয়। আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে মাস্কের কথা বলা হচ্ছে। মাস্ক যেন টাইট ফিটিং হয়। মেডিকেল গ্রেডেড মাস্ক যেগুলো আমরা পরছি, সেগুলোকেই অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কাপড়ের মাস্কের চেয়ে মেডিকেল গ্রেডেড মাস্ক ওমিক্রনের বিরুদ্ধে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে বলে ধারণা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

একটা সময় আমরা বলেছিলাম পুরুষরা অনেক বেশি সংখ্যক আক্রান্ত হচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যে তথ্য এসেছে তাতে ওমিক্রণে পুরুষের চেয়ে নারীর আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি। একইসঙ্গে তরুণদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি। এক সময় বলা হতো তরুণদের ইমিউনিটি বেশি তারা আক্রান্ত হবেন না। ওমিক্রন এসে সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করেছে। শিশুদেরও আমরা আক্রান্ত হতে দেখেছি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইউরোপে।

সারা বিশ্বে কোভিড পরস্থিতি বেশ নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড যখন শুরু হয়েছিল, একেবারে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এরপর থেকে এক দিনের মধ্যে প্রায় ১৯ লাখ আক্রান্ত এমন চিত্র আমরা কখনো দেখিনি। যেটা আমরা গত দুই-তিন দিন আগে দেখতে পেয়েছি সারা বিশ্বময়। এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৩৭২ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার ৩৩৫ জন রোগী মারা গেছেন। করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণের মাত্রা বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আমাদের এখানে বেশ কিছু টেস্ট হচ্ছে এবং টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ধীরে ধীরে। যেহেতু আমাদের কেসও বেড়ে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে তার আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশ টেস্ট বেশি করা হয়েছে। গত ৭ দিনে আমাদের মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। করোনা প্রতিরোধে সারা দেশে মাসব্যাপী ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

আমাদের টার্গেট আছে ১ মাসে ৪ কোটি ভ্যাকসিন আমরা বাংলাদেশের মানুষকে দিতে পারি কি না। আমরা চাই, জুন মাসের মধ্যে আমাদের ৮০ ভাগ লোক বা তারও বেশি সংখ্যক মানুষ যাতে ভ্যাকসিন গ্রহণ করে। পাশাপাশি বুস্টার ডোজের বিষয়ে যারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িত আছেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের বুস্টার নিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে, বলেন রোবেদ আমিন।

এসএইচ-০৩/০২/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)