বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের গতিপথ নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপের পর আরও শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এজন্য দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। মঙ্গলবার রাতে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-১) এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি মঙ্গলবার ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে ১১ মে পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে মানা করা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথের মানচিত্রে দেখা যায়, আজ বুধবার আন্দামান সাগরে অবস্থান করা নিম্নচাপটি ক্রমশ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামী ১৪ মে বাংলাদেশের সেন্টমার্টিনের পাশ দিয়ে মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানবে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। সবসময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথের পূর্বাভাস ঠিক নাও হতে পারে। কারণ এর গতিপথ ক্রমশ বদলায়।

বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাপপ্রবাহ নিয়ে পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও পটুয়াখালী জেলার উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

সিনপটিক অবস্থা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (৮.২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় আরও ঘণীভূত হয়ে প্রথমে ১১ মে পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তী সময়ে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।

এসএইচ-০৬/১০/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)