বাজেটে ১২ মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ ৫৩ হাজার কোটি টাকা

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হলেও মোট বরাদ্দ কমছে মেগা প্রকল্পে। এরকম ১২টি মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৫৩ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এ ক্ষেত্রে বরাদ্দ দেওয়া আছে ৫৪ হাজার ১৫ কোটি টাকা। তুলনামূলক বরাদ্দ কমছে ৫১৮ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় এ অর্থ বরাদ্দ ধরা হয়েছে। তবে সব প্রকল্পেই বরাদ্দ কমছে না। এক্ষেত্রে বরাদ্দ কমবে ৫টির এবং বাড়বে ৭টি প্রকল্পের।

সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে দেওয়া বরাদ্দের তুলনা করে দেখা গেছে ৫টি প্রকল্পে বরাদ্দ কমেছে। আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ কমে যাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে রূপুপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। এতে বরাদ্দ আছে ১১ হাজার ১৩৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা। গত বছরের জুন মাস পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ৫৫ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছর বরাদ্দ কমিয়ে ধরা হচ্ছে ৯ হাজার ৭০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

এছাড়া সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (পিপিপি) প্রকল্পে বরাদ্দ আছে ২১৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে চার হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ কমে দাঁড়াচ্ছে ১১৮কোটি টাকা। কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পে বরাদ্দ আছে এক হাজার ৭২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ছয় হাজার ৮০৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। নতুন বরাদ্দ পাচ্ছে ৭৩৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ আছে পাঁচ হাজার ৯০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ২৩ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পায়রা বন্দর উন্নয়ন আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম প্রকল্পে বরাদ্দ আছে ২৮৬ কোটি টাকা। গত বছর জুন পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৪৬০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছর বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২৫০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বরাদ্দ বৃদ্ধি পাওয়া প্রকল্পগুলো হলো- মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে (আরএডিপি) বরাদ্দ আছে সাত হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। গত বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ক্রয়পুঞ্জিত (শুরু থেকে খরচ) ব্যয় হয়েছে ২৬ হাজার ৮১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছর বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে নয় হাজার ২৫৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

এছাড়া মেট্রোরেল লাইন-৬ প্রকল্পে আরএডিপিতে আছে তিন হাজার ৪৯ কোটি টাকা। গত জুন মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পের আওতায় ক্রমপুঞ্জিত বয় ১৭ হাজার ১২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগামী এডিপিতে বরাদ্দ পাচ্ছে তিন হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলতি বরাদ্দ তিন হাজার ৩০০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ পাচ্ছে পাঁচ হাজার ৮৭০ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

বঙ্গবন্ধু রেল সেতু নির্মাণে চলতি বরাদ্দ দুই হাজার ৬৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে পাঁচ হাজার ৪২১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ তিন হাজার ৭৭৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে চলতি বরাদ্দ আছে এক হাজার ২০ কোটি টাকা। ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ছয় হাজার ১৯৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে চলতি বরাদ্দ আছে ১৮৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। গত জুন পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ৩০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ আসছে চার হাজার ৫৪৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পে বরাদ্দ আছে চার হাজার ৪৬৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে সাত হাজার ৪০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ পাঁচ হাজার ৪৯৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বরাদ্দ নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এরপর চলতি অর্থবছরের তাদের অর্থব্যয়ের অবস্থা এবং আইএমইডির প্রতিবেদন সবকিছু মিলেই প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা ও কাজ বিবেচনায় আগামী অর্থবছরের বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা সবসময়ই মেগা প্রকল্পে গুরুত্ব দিচ্ছি। এগুলোতে যাতে অর্থের কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছে।’

এসএইচ-০৮/০১/২৩ (অনলাইন ডেস্ক)