সংসদ নির্বাচন দেশে এবং বহির্বিশ্বে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পাবে না!

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেটি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ই জানুয়ারি হওয়ার কথা সেটি ‘একতরফা’ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতোই আরেকটি ফলাফল নিয়ে আসবে। তাই এই নির্বাচন দেশে এবং বহির্বিশ্বে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। নির্বাচন বলতে যা বুঝায়- অংশগ্রহণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা তার কোনোটাই এই নির্বাচনে রয়েছে বলে দাবি করা যাবে না। এমন পরিস্থিতিতে আরেকটি একতরফা নির্বাচন দেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলবে।

বুধবার রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে ‘ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ : নির্বাচন, অর্থনীতি এবং বহিঃসম্পর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। এটি সঞ্চালনা করেন সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

গত এক দশকে বাংলাদেশ নিয়ে কিছু বয়ান তৈরি করা হয়েছে। এই বয়ানকে উন্নয়নের পক্ষের বয়ান উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, আমরা দেখেছি এখানে ভুল ও অসত্য তথ্য দিয়ে উন্নয়নের পক্ষে বয়ান তৈরি করা হয়। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কথা প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৪ সালে কী পরিমাণ খাদ্য আমদানি করা হয়েছে তা সামনে আনা হয় না।

দেখা যাচ্ছে ভুল ও অসত্য তথ্য দিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রচার করিয়ে উন্নয়নের বয়ান তৈরি করা হয়েছে। এখানে বলা হয়- আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র।

এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দেশের অর্থনীতির যে অবস্থা সেটি ঊর্ধ্বমুখী না হলেও নিম্নগামী ছিল না। এখন যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা বলা হচ্ছে, তা মূলত নিজস্ব বয়ান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে মিল থাকে না। এ থেকে বুঝা যায়, উন্নয়নের পক্ষে এই বয়ান কীভাবে তৈরি করা হয়েছে।

সিজিএস’র চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)’র বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড. আই. খান পান্না, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমান্ডার (অব) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন ও নিউ এইজ সম্পাদক নূরুল কবীর।

এসএইচ-০৪/২০/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)