এক কেন্দ্রে সাড়ে ৫ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১১৪টি

ঢাকা-৫ আসনের যাত্রাবাড়ী থানাধীন অগ্রদূত বিদ্যানিকেতন হাই স্কুলে অবস্থিত এক কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ৭৭৭ জন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত করতে এখানে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সকাল ৮টা থেকে। দুপুর দেড়টা নাগাদ এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১১৪টি। অর্থাৎ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৭.৯২ শতাংশ ভোট।

ঢাকা-৫ আসনে আটটি কেন্দ্র ঘুরে অভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। কেন্দ্রের ভেতরে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বাইরে ছিল লোকে লোকারণ্য। বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকদের মহড়া, শোডাউন ও মিছিল করতেও দেখা গেছে কোনো কোনো এলাকায়।

অগ্রদূত বিদ্যানিকেতন হাই স্কুল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. শফিউল্লাহ আমাদের সময়কে বলেন, ‘এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৭৭৭ জন। সর্বশেষ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় আমার এখানে ভোট পড়েছে ২৯৯টি। আশা করছি, দুপুরের পর ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। সকাল থেকে আমার কেন্দ্রে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ’

ঘণ্টাব্যাপী এই কেন্দ্রে অবস্থান করে মাত্র একজন ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বুথ কক্ষগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা। পোলিং এজেন্টরা অলস সময় পার করছেন ভোটারের অপেক্ষায়। যদিও কেন্দ্রের বাইরে নৌকা, ট্রাক ও ঈগলের সমর্থকদের ভিড় দেখা গেছে।

ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান সজলের অভিযোগ, ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছেন না নৌকার প্রার্থীরা। একই সঙ্গে এজেন্টদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে এই কেন্দ্রে সব পোলিং এজেন্টের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

প্রিজাইডিং অফিসার মো. শফিউল্লাহ আমাদের সময়কে বলেন, ‘কাউকে ভয়ভীতি দেখানোর কোনো অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। ধারণা করছি, শীতের কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় ভোট কম পড়ছে।’

ঢাকা-৫ আসন ডেমরার পাশাপাশি যাত্রাবাড়ী নিয়ে গঠিত। সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধলপুর, গোলাপবাগ, নুরপুর, পাটেরবাগ, ইসলামবাগ, জনতাবাগ, স্মৃতিধারা, রায়েরবাগ, জনতাবাগ, দনিয়া, সরাই, রসুলপুর, কুতুবখালী, ছনটেক, শেখদী, গোবিন্দপুর, কাজলার পাড়, মাতুয়াইল, কোনাপাড়া, ডগাইর, মোমেনবাগ, রহমতপুর, মুসলিমনগর, মধুবাগ, খানবাড়ী, আদর্শবাগ, রায়েরবাগ, বামৈল, ডগাইর, সারুলিয়া—এসব এলাকা আসনটিতে অন্তর্ভুক্ত।

এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯০ হাজার ৭৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫১ হাজার ৫১৭ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪ জন। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন তিনজন। তাদের ভোটগ্রহণ চলছে ১৮৭টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৮৯টি ভোটকক্ষে।

এই আসনে ১৪ জন প্রার্থী হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর মধ্যে। এই তিন প্রার্থীর অনুসারীরা সকাল থেকেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশায় করে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে দেখা গেছে। কেন্দ্রের বাইরে তিন পক্ষই টেবিল বিছিয়ে অবস্থান নিয়েছেন।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশীদ মুন্না (নৌকা প্রতীক)। আর আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা (ট্রাক প্রতীক) ও কামরুল হাসান (ঈগল প্রতীক)। এই তিনজনের মধ্যে নৌকার প্রার্থী হারুনর রশীদ যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।

এই আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবু জাফর মো. হাবিব উল্লাহ (চেয়ার), বিএনএফের এস এম লিটন (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির আবু হানিফ (সোনালী আঁশ), ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল কাইয়ূম (মিনার), এনপিপির আরিফুর রহমান (আম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের নূরুল আমিন (ছড়ি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোশারফ হোসেন মিয়া (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের সাইফুল আলম (ডাব), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সারোয়ার খান (কাঁঠাল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান (তরমুজ) এবং হাফিজুর রহমান (কবুতর)।

এসএইচ-০২/০৭/২৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক)