শিশুকে নির্যাতন ও শরীর ঝলসে দেয় মাদ্রাসা প্রধানের স্ত্রী

নাটোরে ১১ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে নির্যাতন ও শরীর ঝলসে দেওয়ার পর ৫ দিন ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় মাদ্রাসাপ্রধান ও তার স্ত্রীসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঝলসানো শরীর নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে ছোট্ট শিশু ইয়াসমিন। তুচ্ছ কারণে মাদ্রাসাপ্রধানের স্ত্রীর নির্যাতনে তার এ পরিস্থিতি।

জানা গেছে, নাটোর সদর উপজেলার চর লক্ষ্মীকোল গ্রামের ইমরান ইসলামের ১১ বছরের মেয়ে ইয়াসমিন। উলুপুর এলাকার তালেমুন নিছা হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সে। স্বজনদের অভিযোগ, গত ২৪ সেপ্টেম্বর শিশুটি ভাত রান্নার পর হাত থেকে হাঁড়ি পড়ে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাদ্রাসাপ্রধানের স্ত্রী সালমা বেগম ওই ছাত্রীকে নির্যাতন করেন। এমনকি তার গায়ে গরম ভাতের মাড় ফেলে দেয়। এতে তার বাম হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়।

এখানেই শেষ নয়। শিশুটিকে চিকিৎসা করতে না দিয়ে গোপনে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন তিনি। এতে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বুধবার ইয়াসমিনের স্বজনরা মাদ্রাসায় গিয়ে তালা ভেঙে শিশুটিকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

শিশুটির মা জানান, আমার মেয়েকে নির্যাতনের পর শরীর ঝলছে দেয়। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে ফসকা পড়ে যায়। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয়টি এক শিক্ষক স্বীকার করলেও মাদ্রাসার প্রধান সোহরাব তা অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, শিশুটিকে দিয়ে শুধু ঘর পরিষ্কারের কাজ করানো হতো। এর থেকে বেশি কিছু করা হয়নি।

এ ঘটনায় নির্যাতিতার বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে মাদ্রাসার প্রধান, তার স্ত্রী ও আরেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ অভিযুক্ত ৩ জনকেই গ্রেপ্তার করে। হাসপাতালে ভর্তি শিশুটি শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

এসএইচ-০৬/০১/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)