নীলফামারীতে ঘরে ঘরে জ্বর, আনারসের জোড়া ৪০০ টাকা

নীলফামারীর সৈয়দপুরসহ অন্যান্য উপজেলায় ঘরে ঘরে জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে আনারস অত্যন্ত কার্যকর।

ফলে এর রয়েছে প্রচুর চাহিদা। এদিকে চাহিদা বেশি থাকায় হাট-বাজারগুলোতে আনাসের দাম এখন আকাশচুম্বী।
ইচ্ছেমতো দাম আদায় করছেন বিক্রেতারা। বুধবার জেলার সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন ফলবাজার, আড়ত ও দোকানগুলোতে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাজারে মাঝারি ধরনের প্রতি পিস আনারস ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারে একটু বড় হলেই দাম হাকানো হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। আকারে যত ছোটই হোক, আনারসের সর্বনিম্ন দাম ৮০ টাকা। অথচ প্রতিবছর এ মৌসুমে বড় আকারের আনারসগুলোর দাম থাকতো ৪০-৫০ টাকা। এদিকে পাইকারি বাজারে প্রতি পিস আনারস ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে এমন অস্বাভাবিক দামে হাত পুড়ছে নিম্নবিত্তদের। আনারসের আকাশচুম্বী দামের কারণে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সাধ্যের বাইরের ফল হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি।

শহরের নিয়ামতপুর থেকে আনারস কিনতে আসা ইমরান হোসেন সুলতান জানান, বাসায় বেশ কয়েকজনের জ্বর। তাছাড়া আমি দিন মজুরি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। বাজারে এসেছিলাম আনারস কিনতে, কিন্তু বিক্রেতা প্রতি জোড়া আনারসের দাম চাচ্ছেন ৪০০ টাকা করে। সাধ্যের বাইরে থাকায় কিনতে পারিনি। এ মুহূর্তে পরিবারের কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে বা সন্তানদের জন্য চাইলেও আনারস কিনতে পারছেন না নিম্নবিত্তরা।

অপর ক্রেতা আব্দুর রহিম জানান, মৌসুমি জ্বরকে পুঁজি করে খুচরা বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। অথচ বাজারে মনিটরিং নেই, নেই কোনো প্রশাসন কিংবা ভোক্তা অধিকারের অভিযান। ফলে ইচ্ছেমতো পকেট কাটছেন এসব অসাধু বিক্রেতারা।

শহরেরর শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কের আনারস বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রচুর চাহিদা, আবার উৎপাদন কম ও পণ্য পরিবহন খরচ বেশি পড়ছে, তাই দামও বেশি। একই জায়গায় ভ্যানে আনারস বিক্রি করা মো. হেলাল বলেন, আড়ত থেকে প্রতি পিস আনারস কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকা করে। তবে প্রচুর চাহিদা থাকায় খুচরা বাজারে দাম বেশি। দাম অস্বাভাবিক থাকায় নিম্নবিত্তরা কিনতে পারছেন না।

শহরের ফল আড়তের পাইকার বিক্রেতা শামসাদ বলেন, প্রতিদিন মধুপুর থেকে কয়েক ট্রাক আনারস নিয়ে আসি সৈয়দপুরে। এখানে আনারসের দাম প্রতিদিন ওঠানামা করে। মালের সরবরাহ ও চাহিদার ওপর দাম নির্ভর করে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বাজার হিসেবে আমরা প্রতি পিস আনারস ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি করছি। তবে খুচরা বাজারে কীভাবে ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শামীম হুসাইন জানান, হুট করে দাম বেড়েছে। মূলত মৌসুমি জ্বরকে টার্গেট করে কিছু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়েছেন। আমরা নজরে রেখেছি। যে কোনো সময় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএইচ-২৩/১৩/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)