রাবিতে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’র জন্মশতবর্ষ পালিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’র জন্মশতবর্ষ পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবনে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ ও বাংলা সমিতি যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শহীদ ইকবাল।

সেমিনারে ‘ওয়ালীউল্লাহ্ জন্মশতবর্ষ ও সাম্প্রতিক ওয়ালীউল্লাহ্চর্চার ধারা’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ গবেষক ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক শামসুদ্দিন চৌধুরী। পঠিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন রাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক জুলফিকার মতিন ও অধ্যাপক শামীমা হামিদ।

অনুষ্ঠানের মূল প্রাবন্ধিক অধ্যাপক শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তাঁর লেখার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি, আদমজি ও একুশে পদকের মত পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর ইংরেজি অনুবাদগুলো অনেক ভাষাতে প্রকাশিত হয়ে বিশ্ব জয় করেছে। দেশে তাঁর জীবদ্দশার চেয়ে মৃত্যুর পরে এই স্বীকৃতি প্রবলতর হয়েছে। স্বাধীন দেশে তার রচনার তাৎপর্য যেন বেশি করে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। লালসালু’র পাঠ্যতালিকা ভুক্ত হওয়া একে বাংলাদেশে সর্বাধিক পঠিত উপন্যাসের তালিকায় নিয়ে আসে। তাঁর অন্যান্য উপন্যাস-নাটকও দেশে বিদেশে পাঠ্যতালিকায় স্থান পেয়েছে। পাশাপাশি মঞ্চে অভিনীত হয়েছে ও চলচ্চিত্রে রূপ লাভ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্’র একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনীগ্রন্থ নেই। ওয়ালীউল্লাহ্ চর্চার ক্ষেত্রে যুগোপযোগী ট্রাডিশনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া তাঁর অনেক রচনা অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে। তেমন একটি রচনা হলো ‘একটি বিচারকের কাহিনী’।’ আগামীতে নতুন নতুন গবেষক অনাবিষ্কৃত বিষয়ে ওয়ালীউল্লহ্র মূল্যায়ন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই গবেষক।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দর্শন বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক মহেন্দ্রনাথ অধিকারী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এ হায়দার, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক পিএম শফিকুল ইসলামসহ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত; বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘লালসালু’ বেশ কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হয়ে পাঠক নন্দিত হয়েছে। তাঁর অন্যান্য রচনার মধ্যে রয়েছে- ‘চাঁদের অমাবস্যা’, ‘কাঁদো নদী কাঁদো’, ‘তরঙ্গ ভঙ্গ’, ‘বহিপীর’ প্রভৃতি। ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর ফ্রান্সের প্যারিসে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এলএস-০২/২৮/১২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)