রাজশাহীর শীতে কাঁপছে মানুষ

শীতের তীব্রতায় অসহনীয় হয়ে উঠেছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। টানা দুদিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে বিকেলে। তাও একঝলক। একটু দেখা দিয়েই সূর্যাস্ত হচ্ছে পশ্চিমাকাশে। ফলে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পাশাপাশি কমছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও।

আর সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান কমায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অবর্ণনীয় দুর্ভাগে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষ। পথে প্রান্তের থেকে তারা সীমাহীন দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করছেন। এরই মধ্যে রাজশাহীজুড়ে শীতার্ত মানুষের জন্য শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসছেন অনেকেই। তবে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। অসহনীয় ঠান্ডার হাত থেকে শীতার্ত এই মানুষগুলোকে রক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পযার্য়ে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এদিকে, মঙ্গলবারের পর বুধবারও কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে পদ্মা পাড়ের রাজশাহী। আজ ভোর ৬টা ৪৯ মিনিটে রাজশাহীতে সূর্যোদয় হয়েছে। তবে বেলা ১২টা পর্যন্ত রাজশাহীতে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। এখনও ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ি দিয়ে আছে পুরো রাজশাহী। ফলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে এসেছে। আর এই কারণেই বেড়েছে শীতের দাপট।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান ছিল মাত্র ৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস! আর এই কারণেই শীতের দাপট বেড়েছে। এতে অনেকেই মনে করছেন রাজশাহীর ওপর দিয়ে। এখন হয়তো শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

মূলত রাজশাহীর তাপমাত্রা এখনও ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরেই রয়েছে। আজ বুধবার (৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের গত ২৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা। এরপর তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করলেও আর এত নিচে আর নামেনি।

এদিকে আজও ঘন কুয়াশায় মুড়ে আছে রাজশাহী। এর সঙ্গে বয়ে চলা উত্তরের হিমেল হাওয়া শরীরে কাঁটা দিচ্ছে শীতার্ত মানুষের শরীরে। যতই দিন যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদের ওঠানামা ততই যেন বেসামাল হয়ে পড়ছে। হঠাৎ ওপরে উঠছে, হঠাৎ নামছে। তবে এই ঘন কুয়াশা কেটে গেলে কামড় বসাবে শীত। বাড়বে জনদুর্ভোগ। এমনটাই পূর্বাভাস দিচ্ছে রাজশাহীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, মূলত ঘন কুয়াশা এবং ঠান্ডা বাতাসের কারণেই রাজশাহীতে তীব্র শীতে অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু রাজশাহীর ওপর দিয়ে কোনো শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে না। আর কোনো কোনো সময় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাচ্ছে। তখন শীত আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। যে কারণে অনেকেই ভাবছেন রাজশাহীতে হয়তো শৈত্যপ্রবাহ বইছে। মূলত এই কুয়াশা কেটে গেলেই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। তখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আবারও এক অংকে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন-আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের এই কর্মকর্তা।

এলএস-০১/০৪/০১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)