সীমান্তে এবারও বসল না দুই বাংলার মিলনমেলা

ভৌগোলিক সীমারেখার বেড়াজালে বন্দি দুই বাংলার মানুষ চান আত্মীয়-স্বজনদের সান্নিধ্য। আত্মার সুতোয় বাঁধা ভারত-বাংলাদেশের এসব বাঙালি সুযোগ পেলে পরস্পর মিলিত হন। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রতি পহেলা বৈশাখে সীমান্তে কাঁটাতারের বাধা থাকলেও বসে দুই বাংলার মিলনমেলা। কিন্তু গত তিন বছর ধরে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড় সীমান্তে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে দুই বাংলার মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। এবারও বসেনি এই মিলনমেলা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির এ কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি করোনাভাইরাসের কারণে গত তিন বছর পঞ্চগড় সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা হয়নি। এবারও সীমান্তে এই মেলা চালুর বিষয়ে একটা দরখাস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় দুই দেশ থেকে এ বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

সাধারণত ১ ও ২ বৈশাখে সীমান্তে এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতিবছর বাংলা নববর্ষে পঞ্চগড়ের অমরখানা, শুকানি, মাগুরমারি সীমান্তসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টের কাঁটাতারের পাশে প্রায় ৫-৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই বাংলার এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দুদেশের হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়ে একে অন্যের সঙ্গে কথা ও ভাববিনিময় করেন।

ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির আগ পর্যন্ত এই জেলা ভারতের জলপাইগুড়ির অন্তর্ভুক্ত ছিল। দেশ ভাগের কারণে এখানে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজন দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও দুদেশের নাগরিকরা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যাতায়াতের সীমিত সুযোগ পেতেন। কিন্তু সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পর থেকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন তারা।

উভয় দেশের নাগরিকদের অনুরোধে প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে বিজিবি ও বিএসএফের সম্মতিতে বাংলা নববর্ষের দিন কাঁটাতারের দুই ধারে এসে দেখা করার সুযোগ পান দুই বাংলার মানুষ। তবে টানা চার বছর ধরে এবার পহেলা বৈশাখে হলো না পঞ্চগড়ের এই মিলনমেলা।

অমরখানা সীমান্তে আসা রবিউল ইসলাম জানান, প্রতিবছর নববর্ষের দিনে মিলনমেলা হয়। ভারতে থাকা আত্মীয় সজনদের সঙ্গে দেখা হয়। খুব ভালো লাগে। কিন্তু কয়েক বছর থেকে মিলনমেলা হয়নি। মনে করেছিলাম এবার বুঝি ভারতের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা হবে। কিন্তু হলো না।

এসএইচ-২৪/১৪/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)