রাজশাহীতে ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে বিএনপি-শিবির কর্মী!

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ৪নং দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের সদ্যঘোষিত কমিটির শীর্ষ পদে ঠাঁই পেয়েছে বিএনপি-শিবির কর্মী বলে অভিযোগ উঠেছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানও কমিটিতে ঠাঁই পায়নি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। একই সাথে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত ওই কমিটিতে পদ পেয়েছেন নাহিদ সুলতান ও গোলাম কিবরিয়া।

গত ২০ মে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত ওই কমিটিতে সুলতানকে সাধারণ সম্পাদক ও কিবরিয়াকে যুগ্ন-সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে সুলতানের বাড়ি ওই ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডের নারায়ানপুর গ্রামে। তাঁর পরিবার বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। আর বিকরিয়ার বাড়ি ৮নং ওয়ার্ডের কিশোরপুর গ্রামে। তাঁর চাচা আবু তালেব ওই ওয়ার্ডের জামাতের সেক্রেটারি পদে রয়েছেন।

এর আগে গত ১৬ মে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের কমিটি ষোয়ণা করা হয়। ঘোষিত সেই কমিটিতে উপজেলার ২নং কিসমত গনকৈড় ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতির পদ পায় বিএনপি পরিবারের ছেলে মাইনুল ইসলাম সিয়াম। এতে করে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে নানা রকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন উপজেলার নেতৃবৃন্দ টাকার বিনিময়ে এই পদ দিয়েছেন। শুধু এই দুই ইউনিয়নেই নয় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্ষমতাসীন দলে নেতাকর্মীরা।

৪নং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির পদ প্রত্যাশী ইসমাইল হোসেন রতন। তিনি কেন পদ পাননি জিজ্ঞাসা করলে এব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।

এব্যাপারে ৪নং দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাকিব বলেন, নতুন এই কমিটি উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমাদের কোন মতামতই নেয়নি তারা। এতে করে ইউনিয়নের যোগ্য প্রার্থীরা যা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দল করে তারা পদবঞ্চিত হয়েছে। মুলত দলে গ্রুপিং এর কারণে এমটা করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

ওই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি আব্দুল গোফুর বলেন, আমার জানামতে আওয়াল হোসেন পায়েল সাধারণ সম্পাদকের পদ প্রত্যাশি ছিল। সে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। তাকে পদ না দিয়ে পদ দেওয়া হয়েছে বিএনপি থেকে দলে আসা ছেলেদের। এতে করে দীর্ঘদিন থেকে যারা দলে শ্রম দিচ্ছেন তারা বঞ্চিত হয়েছে।

যুগ্ন-সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিবিরের কর্মী ছিলো এমটা জানেন না উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান। তিনি বলেন, কিবরিয়ার চাচা যে জামাতের সেক্রেটারি সে বিষয়ে আমার জানা নেই। দলের জন্য যারা শ্রম দিয়েছে এবং যোগ্যপ্রার্থী তাদেরই কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে।

পায়েলের বিষয়ে তিনি বলেন, পয়েলের সময় আছে। সে পরবর্তিতে পদ পাবে। তার প্রতিদন্ধি নাহিদ সুলতার দীর্ঘদিন থেকে দলে শ্রম দিচ্ছে তাই তাকে পদ দেয়া হয়েছে। আর যারা অভিযোগ করছেন তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছে বলেও জানান তিনি।

এব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিব এর সাথে টেলিফনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি তাঁর ফোন ধরেনি।

বিএ-১৫/২১-০৫ (নিজস্ব প্রতিবেদক)