রাজশাহীতে থানা থেকে বেরিয়ে গায়ে আগুন : আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা

রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানা থেকে বেরিয়ে গায়ে আগুন দেয়া কলেজছাত্রী লিজা রহমানের (১৮) মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে শাহমখদুম থানায় নিহতের বাবা আলম মিয়া মামলাটি দায়ের করেন।

আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দায়ের করা এই মামলায় নিহতের স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এতে নিহতের শ্বশুর মাহাবুব আলম খোকন ও শাশুড়ি নাজনিন বেগমকেও এজহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া নাম ও সংখ্যা উল্লেখ না করে সাখাওয়াতের বাড়ির আরও বেশ কয়েজনকে আসামির তালিকায় রাখা হয়েছে।

মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়েছে শাহ মখদুম থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বণী ইসরাইলকে। তবে এই মামলায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে গাইবান্ধার নিজ গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে লিজার মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অগ্নিদগ্ধ লিজা। দুপুরে তার মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা।

উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে রাজশাহীর শাহমখদুম থানা থেকে বেরিয়ে গায়ে আগুন দেন লিজা রহমান। পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিন রাতেই তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। ৬৩ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হেরে যান লিজা।

এর আগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ওই ছাত্রী জানিয়েছিলেন, স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তিনি।

লিজা রাজশাহী মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী। তার স্বামী নাম সাখাওয়াত রাজশাহী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত জানুয়ারিতে প্রেমে করে পরিবারের অমতে বিয়ের করেন তারা। বিয়ের পর নগরীর গাঙপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করছিলেন এই যুগল।

এদিকে ওই ছাত্রীর মৃত্যুতে থানা পুলিশের গাফিলতি এবং পারিবারিক কলহ খতিয়ে দেখছে মানবাধিকার কমিশনের চার সদস্যের একটি কমিটি।

বিএ-০৬/০৩-১০ (নিজস্ব প্রতিবেদক)