সিআইডির জালে ধরা সুন্দরীদের ফাঁদে ফেলানো সাজ্জাদ

সুন্দরী নারীদের মোটা বেতনে চাকরির প্রলোভনে ফাঁদে ফেলতেন মেসার্স সুলতান ফুড এন্ড বেভারেজের মালিক শেখ সাজ্জাদ হোসেন (৪৪)। এরপর এসব নারী কর্মীদের জিম্মি করে অনৈতিক সম্পর্কে গড়তেন।

কিন্তু শেষ রক্ষা হলোনা তার। ধরা পড়লেন সিআইডির জালে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, চুরি, ছিনতাই ও অর্থ আত্মসাৎসহ নানান অভিযোগ রয়েছে।

সাজ্জাদ হোসেন বগুড়ার জলেশ্বরিতলার মৃত শেখ আমজাদ হোসেনের ছেলে। রাজশাহীর বিসিক শিল্প এলাকায় মেসার্স সুলতান ফুড এন্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি চালু করেছিলেন তিনি।

এর আগে তিনি বৃহত্তম শিল্পগ্রুপ প্রাণ এ পদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। নানান অপকর্মে জড়িয়ে সেখান থেকে চাকরিচ্যুত হন সাজ্জাদ। এরপর কারখানা খুলে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন তিনি।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৮ সেপ্টেম্বর এই কারখানায় সরবরাহকারী সোহেল আহমেদ মারধর করেন সাজ্জাদ ও তার সহযোগীরা। ময়দা ও চিনি সরবরাহ বাবদ সাজ্জাদ হোসেনের কাছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা পেতেন সোহেল।

মারধর করে তার কাছে থাকা আরো ২০ হাজার টাকা ও একভরি সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন সাজ্জাদ। এনিয়ে ওই দিনই নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন নাটোরের একডালা এলাকার বাসিন্দা সোহেল।

গত ৬ অক্টোবর মামলার তদন্তভার যায় সিআইডিতে। এর কয়েকদিন পর নগরীর বিসিক এলাকার ওই কারখানায় যান তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির নগরীর মতিহার ইউনিটের উপপরিদর্শক হারুনুর রশীদ।

অবৈধভাবে কারখানা পরিচালনারও আলামত পান তিনি। দ্বিতীয় দফা গত ২৪ অক্টোবর আবারো কারখানায় গেলে কাউকে পাননি তদন্তকারী কর্মমকর্তা। রাতারাতি সেই কারখানা বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুদইল এলাকায় সরিয়ে নেয়া হয়।

খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় সিআইডি। সেখান থেকেও পালিয়ে যাচ্ছিলেন সাজ্জাদ। ধাওয়া করে বগুড়ার চারমাথা বাসটার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নানান অপরাধের অকপট স্বীকারোক্তি দেন সাজ্জাদ হোসেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডির মতিহার ইউনিটের উপপরিদর্শক হারুনুর রশীদ বলেন, সুন্দরী নারীদের মোটা বেতনে চাকরির প্রলোভনে ফাঁদে ফেলতেন। এরপর তাদের সবকিছু লুটে নিতেন। এমন বেশ কয়েকজন ভিকটিমের বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য দিয়েছেন অভিযুক্ত।

তাছাড়া সোহেল আহামেদের অর্থ আত্মসাৎ, তাকে মারধর ও টাকা-স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার বিয়ষটি স্বীকার করেছেন তিনি। প্রতিবারই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে রাতারাতি কোম্পানী সরিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা বিচারাধীন। একই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও তদন্তাধীন তার বিরুদ্ধে।

শুক্রবার নতুন করে মতিহার থানায় তার বিরুদ্ধে গাড়ি চুরির মামলা হয়েছে। ভাড়া হিসেবে নিয়ে সালেহা আক্তার নামের এক নারীর গাড়ি গায়েব করে দেন সাজ্জাদ হোসেন। বিয়ষটি স্বিকার করেছেন তিনি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো বলেন, বোয়ালিয়া থানার ওই মামলায় ২৫ অক্টোবর তাকে রাজশাহীর মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে নেয়া হয়। ওই দিনই তাকে আদালত জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন। শনিবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমাণ্ড আবেদন জানানো হয়েছে। রোববার সেই রিমাণ্ড শুনানী হবার কথা।

বিএ-০৯/২৬-১০ (নিজস্ব প্রতিবেদক)