রাজশাহীতে যাত্রীছাউনি দখল নিয়ে আ.লীগ কার্যালয়

রাজশাহীর পুঠিয়ায় জেলা পরিষদের অধিনে নির্মিত ঝলমলিয়া বাজারের যাত্রীছাউনিটি দীর্ঘদিন থেকে বেদখল হয়ে আছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বসার জন্য স্থায়ী ছাউনিটি তৈরি করা হলেও বর্তমানে সেখানে পৌর আ.লীগের কার্যালয় ও দু’টি দোকান ঘরের দখলে রয়েছে। এতে করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত দুরপাল্লার অপেক্ষামান যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত প্রায় ১০ বছর পূর্বে দুরপাল্লার অপেক্ষামান যাত্রীদের সুবিধার্থে ঝলমলিয়া বাজারে স্থানীয় ভাবে যাত্রীছাউনিটি নির্মাণ করেন জেলা পরিষদ। সে সময় ছাউনির সাথে একটি কক্ষ তৈরি করে উপজেলা কৃষকলীগ নেতা শাজাহান আলী হাসুর নিকট ভাড়া দেয়া হয়। আর বেশীর ভাগ জায়গা যাত্রীদের বসার স্থান করা হয়।

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার সকালে যাত্রী ছাউনিতে গিয়ে দেখা গেছে, ছাউনির পূর্বে বরাদ্দ দেয়া কক্ষটিতে পৌর আ’লীগের কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। আর যাত্রীদের বসার স্থানে মকুল নামের এক ব্যক্তি খাবার দোকান ও বেলাল নামের অপর ব্যক্তি পান-সিগারেটের ডালা নিয়ে ব্যবসা করেছেন। যাত্রীদের বসার স্থান দখল করে কেনো দোকান চালু করছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, আ’লীগ নেতাদের অনুমতি নিয়েই এখানে ব্যবসা করছেন। আর আমাদের কাষ্টমার যাত্রীরাই।

ছাউনির পাশে দাড়িয়ে থাকা যাত্রী মিনহাজ হোসেন ও শিমুল বলেন, এটা শুধু খাতা-কলমে যাত্রী ছাউনি। যাত্রীদের সুবিধার্থে ছাউনিটি নির্মাণ হলেও এর সুবিধা নিচ্ছেন দলীয় অফিস ও দোকানদাররা। ছাউনিটি বেদখল হওয়ায় অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের নিয়ে মহিলা যাত্রীরা দূর্ভোগে পড়েন।

পৌর আ’লীগের সভাপতি আবু বাক্কার বলেন, পৌর আ’লীগের কার্যালয়টি অবৈধ দখল করে গড়ে উঠেনি। ওই ঘরটি উপজেলা কৃষকলীগ নেতা শাজাহান আলী হাসু জেলা পরিষদের শর্ত পুরণ করে ভাড়া নেন। তবে দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে ঘরটির ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি। ঘরটি শুধুমাত্র দলীয় কাজে ব্যবহার হয় তা না। এখানে সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আসেন গল্প-গুজব করেন। আর যাত্রী ছাউনিতে স্থানীয় দু’জন অসহায় ব্যাক্তিকে চা-পান বিক্রির জন্য মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে। এতে কোনো যাত্রীদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

উপজেলা কৃষকলীগ নেতা শাজাহান আলী হাসু বলেন, এক সময় যাত্রী ছাউনির একটি ঘর আমি লীজ নিয়েছিলাম। কিন্তু চুক্তি ভঙ্গের কারণে গত কয়েক বছর আগে সে চুক্তি বাতিল হয়ে গেছে। বর্তমানে যাত্রী ছাউনিতে দলীয় কার্যালয় বা দোকা-পাট গড়ে উঠার বিষয়ে আমি অবহিত নই।

এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে পরিষদের সদস্য আবুল ফজল বলেন, যাত্রী ছাউনিটি নির্মানের পর ছোট একটি ঘর তৈরি করে স্থানীয় ব্যবসায়ী হাসুকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত ভাড়া প্রদান না করায় বিধি মোতাবেক ঘরটির চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। তবে যাত্রী ছাউনিটি দখলের বিষয়টি পরিষদকে অবহিত করা হয়েছে।

বিএ-০৫/২৮-১১ (নিজস্ব প্রতিবেদক)