রাজশাহীতে এক সপ্তাহে ২ এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা

রাজশাহীর বাগমারায় পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে সেলিম রেজা (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুইজন পরীক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এসব ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিহত সেলিম রেজা উপজেলার ঝিকরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও একই এলাকার মরুগ্রামের মেহের আলী ছেলে। এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারী উপজেলার কাঁঠালবাড়ি গ্রামের ফারহানা (১৬) নামের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে।

জানা যায়, উপজেলার মরুগ্রামের মেহের আলীর ছেলে সেলিম রেজা গত মঙ্গলবার উপজেলার সাঁকোয়া শিকদারী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষার কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যায়। ওই দিন গনিত পরীক্ষায় ভাল করতে না পেরে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। রাতের খাবার খেয়ে নিজ ঘরে শুয়ে পড়েন।

সবার অজান্তে তিনি রাতের কোন এক সময়ে শয়ন ঘরের তীরের সঙ্গে গলাই ফাঁস দিয়ে আত্ম হত্যা করে। ভোরে বাড়ির লোকজন তাকে ডাকাডাকি করলে তার কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাকে গলাই ফাঁস দিয়ে ঝুলতে দেখতে পায়।

বাড়ির লোকজনের চিৎকারে পাড়ার লোকজন জড় হয়ে গলার ফাঁস কেটে তাকে মৃতবস্থায় মাটিতে নামিয়ে ফেলে। খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং লাশটির সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরী করে। পরিবার ও এলাকার লোকজনের অভিযোগ না থাকায় পুলিশ সেলিম রেজার লাশটি দাফনের অনুমতি দেন।

ফারহানার সহপার্ঠি ও অনুসন্ধানে জানা যায়, নিহত ফারহানা ভবানীগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ নং কক্ষে বাংলা নৈবত্তিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। এসময় ওই সময় কক্ষ পরির্দশক ছিলেন নরসিংপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেলাল উদ্দিন, তাহেরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সাবিনা খাতুন ও বৈলসিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহসিন আলী।

এসময় কক্ষ পরিদর্শক মহসিন আলী ও বেলাল উদ্দিন উদ্দেশ্যমূলক ভাবে কারণ ছাড়াই বার বার কক্ষ পরিদর্শক সাবিনা খাতুনকে দিয়ে দেহ তল্লাশির নামে নাজেহাল করে। এতে করে মেধাবী ওই পরীক্ষার্থী ফারহানা খাতুনের পরীক্ষা খারাপ হয়। পরে ফরহানা মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। বিষয়টি তার বাবা জেনে মেয়েকে শান্তনা দেয়। কিন্তু সে কোন শান্তনায় মেনে নিতে পারছিল না। যে কারণে পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হবে জেনে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এদিকে ফারহানার অকাল মৃত্যুতে তার সহপাটি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষককেরা ভেঙ্গে পড়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, ফারহানা অত্যান্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। সে পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল। তার এমন মৃত্যু কোনে ভাবেই কাম্য নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।

বিএ-০৪/১২-০২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)